শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
নজিরবিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ এসেছে টাঙাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এ অফিস সহকারী।
সম্পদের পাহাড় গড়া ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী (ক্যাশিয়ার) হলেন মো. ফরিদ খান। সম্প্রতি তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভূঞাপুর ও টাঙ্গাইলের চার ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

দুদকে করা অভিযোগের নথি বিশ্লেষণে জানা যায়, ফরিদ খানের মাসিক বেতন ২৬ হাজার ৫৯০ টাকা হলেও তিনি বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জন করেছেন। তিনি হাসপাতালের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসকদের আবাসন বরাদ্দ থেকে কমিশন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন উত্তোলনে উৎকোচ গ্রহণ, রোগীদের খাবার, মেডিকেল পরীক্ষা ও টেন্ডার থেকে কমিশন গ্রহণ করেন। এছাড়া হাসপাতালের নিয়োগ বাণিজ্য ও হাসপাতালের মসজিদে অনুদানের টাকাও আত্মসাৎ করেছেন।
ফরিদ খানের অবৈধ উপার্জনের ফলে গঠিত স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে – ভূঞাপুরের ঘাটান্দির মডার্ণ টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাট, ভূঞাপুর শহরের টাইমস প্যালেসে ৪৫ লাখ টাকা প্রাথমিক বিনিয়োগে একটি ফ্ল্যাট, টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়ায় স্বপ্নচূড়ায় দুইটি ফ্ল্যাট এবং বটতলায় সুন্দরবন টাওয়ারে ৬০ লাখ টাকায় একটি ফ্ল্যাট। এছাড়া, ভূঞাপুরের ফসলকান্দিতে ৫ শতাংশ ভূমি এবং নিকরাইলে ৫০ লাখ টাকায় ৩ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেছেন। রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনের ১৩ নম্বর সেক্টরে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়ের নামে এক কোটি ২০ লাখ টাকায় অভিজাত ফ্ল্যাট কিনেছেন। এক কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল্যে এলাকায় স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পত্তি(জমি) কিনেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় অফিস সহকারী মো. ফরিদ খানের ব্যক্তিগত ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে নগদ ৫৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ফরিদ খানের সাথে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে একাধিকভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয়।
তবে অভিযোগ দাখিলকারীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্ল্যাটফর্মকে জানান, তারা সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে অপকর্মের প্রতিকার পেতে গত ২৪ এপ্রিল দুদকে অভিযোগ দাখিল করেছেন। “একজন অফিস সহকারী কীভাবে পাঁচ কোটি টাকার মালিক হন- জনগনের তা জানার অধিকার আছে” বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবাহান জানিয়েছেন, তার মনে হয়না মো. ফরিদ খান কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। তবে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। অনিয়ম-দুর্নীতি না করলে তদন্ত কমিটি গঠন করার কারণ জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস