বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
- জটিল রোগ সহ সব অপারেশনই করতেন তিনি
- লক্ষ্য ছিলো গ্রামগঞ্জের সহজ সরল রোগীরা
- অপচিকিৎসাই ছিলো তার নেশা ও পেশা
- অপচিকিৎসায় বহু রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরনের অভিযোগ
- রোগী ও নার্সকে যৌন হয়রানি ছিলো নিত্যদিনের কাজ
- নিজেকে পরিচয় দিতেন পত্রিকা ও টেলিভিশনের মালিক
বরিশাল জেলার উজিরপুরে মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার দাবীদার সেই রেজাউল করিমকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে এক বছরের সাজা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাইনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে রেজাউলের মালিকানাধীন মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে রবিবার (২৭ এপ্রিল) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র একটি অভিযান পরিচালনা করেন তাকে বিভিন্ন ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
রেজাউল করিম মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করে ডাক্তারি সনদ না থাকার পরেও তিনি নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবী করে বছরের পর বছর পশ্চিম সাতলা গ্রামে অপচিকিৎসা করে আসছিলেন। শুধু তাই নয় তার অপচিকিৎসায় একাধিক মানুষ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে উন্নত চিকিৎসা করিয়ে এখন সুস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর প্রশাসনের টনক নড়ে। প্ল্যাটফর্মেও নজিরবিহীন প্রতারণা : দাখিল পাশ করেই বনে গেছেন চিকিৎসক! শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল
উল্লেখ্য, প্রতারক রেজাউল উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তবর্তী ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ সীমান্তের পশ্চিম সাতলা গ্রামে গড়ে তুলেন ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’। ওই সেন্টারে বসেই বছরের পর বছর ধরে গ্রামগঞ্জের সহজ সরল রোগীদের অপচিকিৎসা করছেন তিনি। তার অপচিকিৎসায় বহু রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরনের অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোগীদের ভর্তির পরে চিকিৎসা প্রদান বা জটিল অপারেশন করার তথ্য ডায়েরি বা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেননা রেজাউল করিম। এতে তার কাজের কোনো প্রমাণ থাকে না। রোগীদেরকেও কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হয় না।
এ ছাড়া তার সনদপত্রে লেখা-‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। কিন্তু অনুসন্ধান করে এই নামে সনদপত্র প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।
উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ মাইনুল ইসলাম খান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমে বলেন ‘তিনি ভারতের একটি সনদপত্র দেখান। এটার কোনো বৈধতা নেই। তার যেহেতু এমবিবিএসের সনদ নেই, তাই তার দেখানো এসব ডিগ্রির কোনো দাম নেই। তাকে এক বছরের সাজা প্রদান করা হয়েছে।’
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস