ব্যতিক্রমী করোনা চিকিৎসা দিচ্ছেন- ডা. ফারিয়া তাবাসসুম 

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৫ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার 

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে ইতোমধ্যে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। অদৃশ্য এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সামনের কাতারের যোদ্ধারাও আক্রান্ত হয়ে জীবন দিয়েছেন। করোনা ছাড়াও ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী এবং অন্য রোগীদের চিকিৎসায় নিজ উদ্যোগেফিমেল ডেন্টাল সার্জন অব বাংলাদেশথেকে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমইউ) অর্থোডন্টিস্ট বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. ফারিয়া তাবাসসুম তন্বী।

ডা. ফারিয়া ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ফিমেল ডেন্টাল সার্জনদের নিয়ে একটি ফেইসবুক গ্রুপ খুলেছিলেন। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিলে ৫০ জন ফিমেল ডেন্টাল সার্জন নিয়ে একটি ফ্রি মেডিক্যাল টিম গঠন করেন। পরবর্তীকালে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ এবং করোনা ডেডিকেটেড চিকিৎসক। তিনি এ টিমের সদস্যদের মোবাইল নম্বর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন, যেন যে কেউ ফোন দিয়ে চিকিৎসা নিতে পারে।

ডা. ফারিয়া বলেন,

“শুরুটা হয়েছিল ফলস নেগেটিভ রিপোর্টের কারণে। করোনা ভাইরাস রিপোর্ট নেগেটিভ বলে আমাদের ফিমেল ডেন্টাল সার্জন শুভেচ্ছার বাবার (৬৫) নিশ্বাসে কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও তাকে ভর্তি করছিল না করোনা ডেডিকেটেড কোন হাসপাতাল। তিনদিন বিভিন্ন হাসপাতালের ঘুরে ঘুরে তিনি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ছিল বলে অন্য হাসপাতালও ভর্তি করছিল না। তখন কী করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনলাইনে অক্সিজেনের খোঁজ পেলাম। পালস অক্সিমিটার কিনলাম। বাসায় রেখেই ইমারজেন্সি চিকিৎসা শুরু করলাম। অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিলাম আমি আর ডা. শুভেচ্ছা। রাত জেগে ফোনেই চিকিৎসা দিতাম। আমাদের সঙ্গে অনকলে থাকতেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।”

এভাবেই একজন-দু’জন করে বর্তমানে ৫০০ জন রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলেছেন। যাদের বেশিরভাগের বয়স পঞ্চাশের বেশি। কাজ করতে করতেই করোনা পজিটিভ হলে, ফারিয়া তাবাসসুম হোম কোয়ারেন্টিনে থেকেই চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছেন।

ডা. ফারিয়া তাবাসসুম আরো জানান,

“যারা হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে চিকিৎসা পাচ্ছেন না, তাদের জন্য আমরা বাংলাদেশ ফিমেল ডেন্টাল সার্জনের (এফডিএসবি) উদ্যোগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠন করেছি ‘ইমারজেন্সি কোভিড-১৯ মেনেজমেন্ট টিম’। বাড়িতেই চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের অধিকাংশ সুস্থ করা সম্ভব। এটি খুব জটিল রোগ নয়। বয়স্ক ও আগে থেকেই অন্য রোগে আক্রান্তরাও বেঁচে যাচ্ছেন। প্রথম থেকেই চিকিৎসা দিলে অধিকাংশ মানুষের জীবন বেঁচে যাবে। আমরা কোভিড-১৯ পজিটিভ বা নেগেটিভ রিপোর্ট যাই আসুক না কেন, লক্ষ্মণ থাকলেই চিকিৎসা শুরু করে দেই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা তরুণ তাদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার বিনিময়ে, আমরা তাদের প্লাজমা ডোনেট করতে উৎসাহ দিচ্ছি। আর যারা সচ্ছল তাদের বলেছি, কোনো অভাবী পরিবারের চিকিৎসার খরচ যেন সম্ভব হলে তারা বহন করেন। যাদের রিপোর্ট ফলস নেগেটিভ বা ফলস পজিটিভ আসছে, তারা কোনো চিকিৎসা না পেয়েই মারা যাবে, তা হবে না। ঘরে বসেই চিকিৎসা দেওয়া এবং নেওয়া সম্ভব। এটা করতে পারলে ক্রিটিক্যাল রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্র উম্মুক্ত হবে। কেউ তখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মারা যাবে না।”

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: আরো ৩৯ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩৯৪৬ জন

Thu Jun 25 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০ গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩,৯৪৬ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ৩৯ জন, আরোগ্য লাভ করেছেন ১,৮২৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগী ১,২৬,৬০৬ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ১,৬২১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন মোট ৫১,৪৯৫ জন। দুপুর ০২.৩০ ঘটিকায় […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo