কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে ১২০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার চালু করলো আইওএম

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ অগাস্ট ২০২০, মঙ্গলবার  

গত ১৭ অগাস্ট(সোমবার), কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২০(এক্সটেনশন) ক্যাম্পে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য নির্মিত করে ১২০ শয্যার সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি ইনফেকশন (এসএআরআই-গুরুতর তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ) আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (আইটিসি)।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মাহবুব আলম তালুকদার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইওএম বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান ম্যানুয়েল পেরেইরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন,

” করোনা পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের মাঝে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে মানবিক কর্মসূচি পরিচালনা করেছি। সে কারণে সফলতাও পেয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আমরা প্রথম অগ্রাধিকার দিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার মাঝে করোনা আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে, এই কৃতিত্ব সবার”।

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন, ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. আতিকুর রহমান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২০ ও ২০ এক্সটেনশন-এর ক্যাম্প ইনচার্জ মো. আবদুস সবুর, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিকারুজ্জামান, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. রঞ্জন বড়ুয়া এবং ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়ক ডা. মুকেশ কুমার প্রজাপতি বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

ছবিঃ আইসোলেশন সেন্টার

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাটি এ পর্যন্ত তিনটি এসএআরআই আইটিসির ২৩০টি শয্যার মাধ্যমে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোভিড-১৯ এর সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সংকটের শুরু থেকেই কক্সবাজারে মানবিক সহায়তা কাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরকে আশ্রয় দেওয়া এই জেলাটিতে সম্ভাব্য মহামারি মোকাবেলায় সম্ভাব্য প্রস্তুতির জন্য কাজ করছে।

উল্লেখিত এসএআরআই আইটিসিগুলোর পাশাপাশি আইওএমের মাইগ্রেশন হেলথ ডিভিশন এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে আরো চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের পুনর্গঠন করেছে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব কমানো ও বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার জন্য কক্সবাজার জেলায় আইওএম যেসব অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সহায়তা দিয়েছে তা হলো- আইওএম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১০ জন মেডিকেল অফিসার, একজন রেডিওলজিস্ট, একজন রেডিওগ্রাফার, একজন স্যানিটেশন অফিসার এবং ১৫ জন ক্লিনার সহায়তা প্রদান করেছে এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীদের জন্য পিপিই সরবরাহ করেছে। আইওএম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রামু এবং চকরিয়ায় এসএআরআই আইটিসি গুলোতে শয্যা বাড়ানো এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন পরিষেবার মান উন্নয়নে সহায়তা করছে। উখিয়া ও টেকনাফসহ জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে বিভিন্ন সহায়তা সরবরাহ করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ রোগীদের এবং তাদের পরিবারদের সাথে সমন্বয় ও সঠিকভাবে পরিচালনা করতে অ্যাম্বুলেন্স প্রেরণ এবং রেফারেল ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছে আইওএম। রেফারেল করা কোভিড-১৯ রোগী বহন করার জন্য সাতটি অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিচ্ছে। এছাড়াও আইওএম ২৪ ঘণ্টা হটলাইন এবং ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত গুজব এবং ভুল তথ্য প্রতিরোধ করে জীবন রক্ষাকারী তথ্য সরবরাহ করছে।

প্রসঙ্গত আইওএম ৩৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে ৯৩টি আশ্রয়সেয়াকে ৪৬৫ জনের ধারণ ক্ষমতার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রূপান্তর করা হয়েছে।

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: আরো ৪৬ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩২০০ জন

Tue Aug 18 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০২০ গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩,২০০ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ৪৬ জন এবং আরোগ্য লাভ করেছেন ৩,২৩৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগী ২,৮২,৩৪৪ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ৩,৭৪০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন মোট ১,৬২,৮২৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo