X

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের উপকারিতা নেই

প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০।

চীনের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ১৫০ জন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর উপর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা অপেক্ষা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সহায়ক ভূমিকা পালন করে না বরং এর ব্যবহারে দেখা যায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তবে গবেষকরা কোভিড-১৯ চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কোনো উপকারী ভূমিকা পালন করে কিনা এ প্রশ্নের কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে নি।

চীনের সাংহাই এর রুইজিন হাসপাতালের পালমনোলোজি এবং ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের সাথে ওয়েই তাং এর সহকর্মীরা ফেব্রুয়ারিতে চীনের ১৬ টি চিকিৎসা কেন্দ্রের কোভিড-১৯ এর রোগীদের উপর এ গবেষণা করেছিলেন এবং তাদের অনুসন্ধান গুলো মেডআরসিভ প্রিপ্রিন্ট সার্ভারে প্রকাশ করা হলেও তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়নি।
৭৫ জন করে দুই গ্রুপের এক গ্রুপকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা এবং অপর গ্রুপকে শুধুমাত্র উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসা দেয়া হলে, দুই গ্রুপেরই ২৮ দিনে কোভিড-১৯ নেগেটিভ হবার অনুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসায় কোভিড-১৯ নেগেটিভ হবার হার ছিল ৮৫.৪%। অপরদিকে শুধুমাত্র উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসায় কোভিড-১৯ নেগেটিভ হবার হার ছিল ৮১.৩%। উল্লেখ্য যে, ৪র্থ, ৭ম, ১০ম, ১৪তম ও ২১তম দিনগুলোতে দুই গ্রুপের নেগেটিভ হবার হার একই ছিল।

এইচসিকিউ গ্রুপের ১০% রোগীর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল ডাইরিয়া, যেখানে নিয়ন্ত্রণ গ্রুপের ৪.৪% রোগীর মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না।
এইচসিকিউ গ্রুপ এর দু’জন রোগীর মধ্যে প্রতিকূল ঘটনা হিসেবে অভিজ্ঞ রোগের অগ্রগতি এবং উর্ধ্ব শ্বাসনালির সংক্রমণ দেখা যায়।
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন গ্রুপের রোগীরা প্রথম ৩ দিন ১২০০ মিলিগ্রামের লোডিং ডোজ এবং বাকি দিনগুলির জন্য প্রতিদিন ৮০০ মিলিগ্রাম করে মেইনটেনেন্স ডোজ সেবন করতেন। মৃদু থেকে মাঝারি রোগের ক্ষেত্রে রোগীরা ২ সপ্তাহ এবং গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে ৩ সপ্তাহ যাবৎ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবন করেন তবে উপসর্গ উপশমে কোনো পার্থক্য নেই।
দুই গ্রুপেই ২৮ দিনে উপসর্গ উপশমের ফলাফল একই ছিলো যা, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এবং উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসা নেয়া রোগীর ক্ষেত্রে ৫৯.৯% অপরদিকে শুধুমাত্র উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা নেয়া রোগীদের গ্রুপে ছিলো ৬৬.৬%।
রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মোট সময়কাল ২ সপ্তাহ এবং গুরুতর রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ৩ সপ্তাহ ছিল এবং ২৮ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলি হ্রাসের ক্ষেত্রে পার্থক্য এইচএসকিউ প্লাস এসওসি তে ৫৯.৬ % বনাম এসওসি- তে ৬৬.৬ % ছিল।
তবে গবেষকেরা, এ্যান্টি-ভাইরাল ঔষধ ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য হারে উপসর্গ হ্রাসের প্রমাণ পেয়েছেন।
এছাড়াও, তাং ও তার সহকর্মীর প্রতিবেদনে দেখা যায়, কন্ট্রোল গ্রুপের তুলনায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন গ্রুপে প্রদাহের বায়োমার্কার সি-রিএ্যাকটিভ প্রোটিন (সিআরপি) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। গবেষকগণ সুপারিশ করেন যে, উপসর্গের উপশম হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের প্রদাহ বিরোধী প্রভাবের কারণে হতে পারে। যা অন্যান্য প্রচলিত প্রদাহবিরোধী ওষুধের প্রভাবের চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু নয়।

উল্লেখ্য, রোগীদের গড় বয়স ৪৬বছর এবং তাদের ৫৫% পুরুষ ছিল। প্রায় সকলেরই মৃদু বা মাঝারি রোগ ছিল এবং দুইজনের গুরুতর রোগ ছিল।

তথ্যসূত্র : https://www.medscape.com/viewarticle/928798?nlid=135145_5141&src=WNL_mdplsfeat_200421_mscpedit_peds&uac=106049MY&spon=9&impID=2355167&faf=1

অনুবাদ : গৌরী চন্দ

হৃদিতা রোশনী:
Related Post