X

এফডিএ অনুমোদিত হল ডেঙ্গু ভ্যাক্সিন

ডেঙ্গু ভাইরাসের সকল সেরোটাইপ (১,২,৩ এবং ৪) দিয়ে হওয়া জ্বরের জন্য আবিষ্কৃত ভ্যাক্সিনকে(টিকা) অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ। এই ভ্যাক্সিন নিতে পারবে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী সে সকল তরুন তরুনী যাদের পূর্বে একবার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে।

ভ্যাক্সিনের ডোজঃ ভ্যাক্সিনটির নাম ডেনভ্যাক্সিয়া [Dengvaxia (Sanofi Pasteur)]। প্রথমবার দেয়ার ৬মাস পরে একটি ইঞ্জেকশন, তার ১২মাস পরে আরেকটি ইঞ্জেকশন দিলে অর্থাৎ মোট ৩টি ইঞ্জেকশন দিলে ভ্যাক্সিনটির ডোজ কমপ্লিট হবে।

 

এন্ডেমিক জোনঃ সারা বিশ্বেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।ঢাকার ১৯টি এলাকাকে ডেঙ্গু বিস্তারে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।সেগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) আছে বনানী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, গাবতলী, মগবাজার, মালিবাগের একাংশ, মিরপুর-১, মহাখালী ডিওএইচএস, নাখালপাড়া, পূর্ব শেওড়াপাড়া, টোলারবাগ ও উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টর। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ধানমণ্ডি ১, এলিফ্যান্ট রোড, গুলবাগ, কলাবাগান, মেরাদিয়া, মিন্টো রোড, বেইলি রোড ও শান্তিনগর। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর মৌসুম মূলত এপ্রিল থেকে অক্টোবর। ঢাকায় প্রতি বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার উপদ্রব বাড়ে।

উপসর্গঃ ডেঙ্গুর শুরুর দিকে তেমন কোন উপসর্গ থাকে না। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের মতই মনে হয়।আসতে আসতে আনুসাঙ্গিক উপসর্গ দেখা যায়।পরবর্তীতে অন্য সেরোটাইপ দিয়ে আক্রান্ত হলে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে রুপ নিতে পারে। যা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডেঙ্গুর সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। উপসর্গ অনুসারে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ইমুনিটিঃ ডেঙ্গুর একটি সেরোটাইপ দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর তা দিয়ে আর সেই ব্যাক্তি কখনো আক্রান্ত হয় না। তবে অন্য সেরোটাইপ দিয়ে তার পুনরায় ডেঙ্গু হতে পারে। পুনরায় অপর সেরোটাইপ দিয়ে হওয়া ডেঙ্গু বেশি মারাত্মক হয়। সে জন্যেই এ ভ্যাক্সিনকে অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ ডেঙ্গু এন্ডেমিক অঞ্চলে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের উপর এই ভ্যাক্সিন পরীক্ষা করা হয়েছে।ডেনভ্যাক্সিয়ার উল্লেখযোগ্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, দূর্বলতা, লো গ্রেড জ্বর।যদিও পরবর্তী ডোজের পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমতে থাকে।

যাদের জন্যে প্রযোজ্যঃ পূর্বে কারো ডেঙ্গু না হয়ে থাকলে এই ভ্যাক্সিন কাজ করবে কিনা তা এখনও জানা যায় নি।কারণ ডেনভ্যাক্সিয়া দেয়ার পর তাদের প্রথম ডেঙ্গু জ্বরের মত উপসর্গ দেখা গেছে। যা মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। তাই এফডিএ বলেছে পূর্বে ডেঙ্গু হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পরেই যেন কাউকে এই ভ্যাক্সিন দেয়া হয়।

অনুমান করা হয় বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ এমন জায়গায় বসবাস করে যেখানে ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি বছর বিশ্বে ৪০০মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। তার মধ্যে প্রায় ২০হাজার জন মারা যাচ্ছে। এ ধরনের রোগ গুলো প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। তাই এফডিএ এসব রোগের প্রতিষেধক বানাতে উৎসাহ দিতে ডেনভ্যাক্সিয়া অনুমোদন দিয়েছে।

ডেনভ্যাক্সিয়া শুধুমাত্র ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী, পূর্বে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ব্যাক্তিকেই দেয়া যাবে।

প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটারঃ উর্বী সারাফ আনিকা
৫ম বর্ষ,
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ।

Urby Saraf Anika:
Related Post