X

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের গেট বন্ধ করে দিলো স্থানীয়রা

প্ল্যাটফর্ম নিউজ,

রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হবার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঐ হাসপাতালের পেছনের গেট বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল (শনিবার) সকালে স্থানীয় যুবকরা জড়ো হয়ে বাঁশ বেঁধে গেটটি আটকে দিয়েছেন বলে জানা যায়।

এতে করে বিপাকে পড়েছেন উক্ত হাসপাতালের ডাক্তার, রোগীসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা। বরিশাল নগরীতে বসবাসকারী শেবাচিমের ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল কর্মচারীসহ সকলে গেটটি ব্যবহার করে যাতায়াত করে। পাশাপাশি রোগী প্রবেশের জন্যও এটি একটি সহজ পথ। কিন্তু গেটটি বন্ধ করে দেওয়ায় কমপক্ষে ৩ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে হাসপাতালে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন রোগী সেবার সময় নষ্ট হবে, তেমনি অন্যদিকে দ্রুত হাসপাতালে না ঢুকতে পেরে ঝুঁকিতে পড়বে রোগীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,

“শনিবার সকালে কমপক্ষে ১০ জন নার্সসহ ৪/৫জন ডাক্তারকে এই গেট দিয়ে ঢুকতে দেয়নি স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বাঁধা দিয়ে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। শেষে বাংলাবাজার, পুলিশ লাইন্স, ডিসি লেক, বান্দ রোড ঘুরে মেডিকেলের সামনের গেট থেকে প্রবেশ করেছে তাঁরা।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স বলেন,

“আমিসহ কয়েকজন ওই গেট থেকে নিয়মিত যাতায়াত করি। কিন্তু আজ সকালে আমাকে ঢুকতে দেয়নি। শেষে অনেক কষ্ট করে অনেক পথ হেটে সামনের গেট থেকে ঢুকতে হয়েছে। আমার সাথে যারা গেট আটকে দিয়েছিল তারা যথেষ্ট রুঢ় আচরণ করেছেন। আরও কয়েকজন স্টাফ, নার্স ও ডাক্তারকে গেট থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”

ঘটনাটির ভুক্তভোগী হাসপাতালের আরেক নারী চিকিৎসক জানান,

“আমিসহ বেশ কয়েকজন ডাক্তার পিছনের গেট সংলগ্ন বাসা ভাড়া করে থাকি। কিন্তু আমাকেও আজ ঐ গেট থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এতে করে আমিও যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছি; তেমনি রোগীদের সেবা দিতেও সময়ক্ষেপন হচ্ছে। লকডাউন মানে কোন সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা নয়। হাসপাতালের গেট যদি বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে ডাক্তার যাবে কােথা থেকে। রোগীদের সেবা দিবে কিভাবে?”

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হােসেন বলেন,

“বিষয়টি আমি কিছুক্ষণ আগে জেনেছি। সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। কেন, কারা করলো তাও জানা হচ্ছে। হাসপাতালে তো করোনা আক্রান্ত রোগী আছে। ছাত্র হোস্টেলের কেউ আক্রান্ত শুনে গেট আটকানো উচিত না।”

জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন,

“শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ওদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খানের নির্দেশনা মোতাবেক লকডাউনে কোন সড়ক বন্ধ করা যাবে না। জরুরী প্রয়োজন, এ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ/বাহির প্রভৃতি কাজের জন্য সকল সড়ক খোলা রাখতে হবে। কিন্তু প্রশাসনের সেইসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাঁশ বেঁধে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেট আটকে দেওয়া হলো। বিষয়টিকে নিন্দনীয় হিসেবেই আখ্যায়িত করছেন সচেতন ব্যক্তিরা। ‘ফ্রন্টলাইনার’ হিসেবে কাজ করা ডাক্তার, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর পাশে দাঁড়ান। কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে করোনা মোকাবেলায় তাঁদের সহায়তা করুন, সাহস যোগান! দেশকে করোনামুক্ত করতে এঁদের অগ্রণী ভূমিকাই মুখ্য!

নিজস্ব প্রতিবেদক/ অংকন বনিক জয়

জামিল সিদ্দিকী: A dreamer who want to bring positive changes in health sector in Bangladesh.
Related Post