X

পেরিফেরি কথন – ১: রোগী, ইনভেস্টিগেশন আর আমি

রবিবার, ৭ জুন, ২০২০

ডা. মোবাশ্বের আহমেদ
মেডিকেল অফিসার
পীরগাছা উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স, রংপুর

পেরিফেরিতে এসেছি ১০ দিন হলো। এসেই প্রথম রোগী দেখার পরই দেখি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের লোকের মন খারাপ। কারন ইনভেস্টিগেশন দেই নাই। যে পল্লী চিকিৎসক নিয়ে এসেছেন, তারও মন খারাপ। কারন কামাই ভালো হয় নি!

উল্লেখ্য রোগীর ইনভেস্টিগেশন যত টাকার হবে, ঐ পল্লী চিকিৎসক তার অর্ধেক পাবেন। বেচারা ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ইনভেস্টিগেশন আশা করেছিলেন। তাতে তার দুই থেকে আড়াই হাজার লাভ হতো। ইনভেস্টিগেশন না দেয়াতে তার লাভ কত হলো হিসেব করে নিবেন।

পরে দেখি আরো একজনের মন খারাপ। সে হলো রোগী! কারন পল্লী চিকিৎসক বুঝিয়েছেন, এই ডাক্তার অতটা ভালো না। পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে ঔষধ যে দেয়, সে আবার ভালো ডাক্তার নাকি? তাই আমার চোখের সামনেই আমার পাশের চেম্বারের ডাক্তারকে আবার দেখালেন। তিনি আবার আলহামদুলিল্লাহ, দুনিয়ার হালচাল জানা মানুষ। এলার্জি ডায়াগনোসিস করতে ইউরিন আর.ই. (প্রসাবের রুটিন টেস্ট) তো করালেনই, এমনকি এই ফাঁকে লিভার ফাংশন টেস্ট দিয়ে লিভার টাও দেখে নিলেন। মারহাবা মারহাবা!

সব দেখা শেষে আমার দেওয়া ঔষধেরই শুধু গ্রুপ চেঞ্জ করে দিলেন! মাঝে থেকে রোগীর ৪২০০ টাকা হাওয়া। দেখি তবুও রোগী খুশি!

আমি চেম্বারে বসে বসে ভাবছি, একজন ডাক্তার যে সৎভাবে চিকিৎসা দিবে, সেটা নেওয়ার যোগ্যতাও তো রোগীর থাকতে হবে।

Sarif Sahriar:
Related Post