X

কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প || পর্ব-৬

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ ই আগস্ট, ২০২০, শনিবার

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ।

“ম্যাম আমার প্রথম সমস্যা হলো, অনেক অস্থিরতায় ভুগি আর সাথে বেশি ভয় পাই! আগে মাঝে মাঝে প্যানিক এটাক হতো। বদ্ধ জায়গায় বেশি ভয় লাগে। এগুলা ছাড়াও মেইন সমস্যা হলো ইনসেক্যুরিটি! সব কিছুতে অনেক ভয় কাজ করে। সেল্ফ কনফিডেন্স ন্যায়ারলি জিরো!”

মানুষটি পেশাজীবী, বিয়ে করেন নাই, সম্পর্কেও জড়াননি। কারণ ওর ‘ভিতরের আমি’ এতটাই বেশি কাতর যে, নিজেকে গুছিয়ে নিতে নিতে নিজের অস্থিরতার কারণ খুঁজতে খুঁজতে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ার মতই এরপরের লেয়ারে উঠে আসে প্যানিক এটাক। তারপর সেটা ট্যাকেল করতে না করতেই তার নিচে খুঁজে পায় ইনসেক্যুরিটি, তার নিচে ভয়, এভাবে চলতেই থাকে। মেয়েটির মনের গহীন কুয়ায়  প্রতি ধাপে ধাপে বদ্ধ জায়গার আরও কত কিছু যে লুকিয়ে আছে সে নিজেও জানে না। নিজেকে বুঝতে না পারার এইবোধ থেকে ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে আত্মবিশ্বাস। নিজেকে তুচ্ছ মনে হতে থাকে সবার তুলনায়।

তারপর সেই কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প-

মানুষটি নিজেকে একটু একটু করে গুটিয়ে নিতে থাকে চার দেয়ালের মাঝে। তার “ভিতরের আমি” আরও কুঁকড়ে যেতে থাকে অযত্নে, অবহেলায়। কারণ নিজেকে নিজের মতো করে, নিজে না বুঝলে বাইরের কে বুঝবে? কেউ আসবে না মনের কালকুঠুরি থেকে উদ্ধার করতে।

আমরা আমাদের চারপাশের আন্তঃসম্পর্কগুলিকে যতটুকু যত্ন করি “ভিতরের আমি”-কে কি আদৌ প্রতিদিন ততোটুকু যত্ন করি? “আমার আমি” কি চাই তাঁর সেই ছোট্ট ছোট্ট নির্দোষ চাওয়া পাওয়াগুলি মিটুক? ছেলে মাছ খায় না বলে এই অকালের বাজারে আমার মাছ পছন্দস্বত্বেও দিনের পর দিন আমি ওর পছন্দকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মাংসই রান্না করেছি।

একটু ভেবে বলুনতো, নিজের ভালো লাগার কোন কাজটা শেষ কবে করেছেন? আর আগে না করলে এখন শুরু করতে দোষ কি? সেলফ কেয়ার নেয়া মানে কিন্তু সে সেল্ফিশ হওয়া না।

অন্যকে যত্ন করার পাশাপাশি যাঁরা নিজের “ভিতরের আমি”-এর যত্ন করেন তাঁদের জন্য অনেক ভালোবাসা।
Sadia Kabir:
Related Post