X

শীতকালের অসুখ-বিসুখঃ কি করবেন?

শুরু হয়ে গেছে শীত : সর্দিজ্বর, কাশি এবং গলায় ব্যথা হলে কি করবেন??
সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের দেশে কিছু কিছু রোগ খুব বেশি বেড়ে যায়! বিশেষত বাচ্চা, বৃদ্ধ এবং ক্রমাগত রোগে আক্রান্তদের রোগগুলো বেশি হয়ে থাকে! এই সময় সর্দিজ্বর এবং গলায় ব্যথা রোগগুলো থেকে সাবধানে থাকতে হবে!

সর্দিজ্বর এবং গালায় ব্যাথার কারণ?
এটা সাধারণত হয়ে থাকে বায়ু বাহিত ভাইরাসের আক্রমণে এবং ভাইরাসগুলো দ্রুত রোগ প্রতিরোগ ব্যবস্থাকে পরাভূত করে শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে!


কিভাবে ছড়ায়??
ভাইরাসগুলো খুবই সংক্রামক সুতরাং হাচি, কাশি কিংবা আক্রান্তের ব্যাবহারিত জিনিসপত্রের মাধ্যমে এটা ছড়াতে পারে! নাক, চোখ এবং মুখ দিয়ে ভাইরাসগুলো শরীরে প্রবেশ করে!

কিভাবে রোগ প্রতিরোধ করবো ?
আমরা অতিসহজে এই রোগটা প্রতিহত করতে পারি!তবে সেক্ষেত্রে আমাদেরকে –


১। যথাযথ শীতবস্ত্র ব্যাবহার করতে হবে।
২। নিয়মিত হাত পরিষ্কার করতে হবে ।
৩। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে ।
৪। প্রচুর ফলমুল এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
৫। নিজে পরিষ্কার থাকতে হবে এবং আশপাশের পরিবেশও পরিষ্কার রাখতে হবে!
৬। ভিটামিন এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে!
৭। ব্যায়াম করতে হবে!
৮। ধুমপান পরিহার করতে হবে!

সর্দিজ্বর এবং গলাব্যাথা হলে কি করবেন??
যদি কারও সর্দিজ্বর ও গলায় ব্যথা হয় তাহলে ভয়ের তেমন কোন কারণ নেই! এটা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিনেই ভালো হয়ে যায় তবে আপনাকে যেটা করতে হবে-
১। কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে গড়গড়া করবেন।
২। সাধারণ তাপমাত্রার পানি খাবেন।
৩। গরম পানি পান করবেন না!
৪। ঠান্ডা পানি পান করবেন না!
৫। বাচ্চাদেরকে চকলেট কিংবা শক্ত মিষ্টি খেতে দিতে পারেন ।
৬। ধুমায়িত পরিবেশ পরিহার করুন।
৭। ধুমপান বন্ধ করুন।
৮। সম্ভব হলে মাস্ক ব্যাবহার করুন।
৯। প্রচুর পানি পান করুন!
১০। বাচ্চাদের হাত বেশি বেশি পরিষ্কার করুন ।
মেন্থল কিংবা এলাচের ভাপ নিতে পারেন তবে কখনোই গরম ভাপ নিবেন না! যদি নেন তাহলে লাভের চেয়ে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি!


কখন ওষুধ খাবেন?
১। যদি জ্বর বেশি হয় কিংবা গলা ব্যথা বেশি হয়।
২। ডাইবেটিস, অ্যাজমা কিংবা ক্রনিক কোন রোগ থাকে।
৩। থাইরয়েডের কোন সমস্যা থাকলে!
৪। রিউমাটিক ফেভার থাকলে
৫। যদি বারবার গলায় ব্যথা হয়!
৬। হার্টের কোন রোগ থাকে তাহলে আপনাকে ওষুধ খেতে হবে!

কি ধরনের ওষুধ খাবেন??
প্রথম প্রথম আপনি শুধুমাত্র প্যারাসিটামল খেলেই চলবে! তবে অবশ্যই আইবুপ্রোফেন কিংবা এসপিরিন জাতীয় ওষুধ পরিহার করবেন! সর্দি থাকলে এন্টিহিস্টামিন যেমন লোরাটিডিন, ডেসলোরাটিডিন, ফিক্সোফেনাডিন ইত্যাদি খেতে পারেন। সাধারণত এর জন্য কোন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় না !

কখন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন??
উপরের কারণ ছাড়াও যদি শ্বাসকষ্ট, বুকে ঘর ঘর শব্দ বা বাঁশির মত শব্দ, কন্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যায়,জ্বর খুব বেড়ে যায় তাহলে আপনার অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা উচিত! তবে আপনাকে এর জন্য জন্য কমপক্ষে তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে! অর্থাৎ তিন দিন পর এন্টিবায়োটিক শুরু করতে হবে!

খারাপ কিছু কখন ভাববেন?
যদি বার বার জ্বর আসে, সব সময় গলাতে ব্যাথা থাকে, শ্বাসকষ্ট খুব বেশি হয়, মুর্ছা যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাই তাহলে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে গ্ল্যান্ডুলার ফিভার, নিপাহ, মার্চ কিংবা গলার অন্যান্য জটিল রোগ এক্সক্লুড করতে হবে!
সাবায় সুস্থ থাকুন । ভালো থাকুন। নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন!

ডা.আজিজুর রহমান
আবাসিক মেডিকেল অফিসার
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ!

ডক্টরস ডেস্ক: bddoctorsplatform@gmail.com
Related Post