মেডিকেলের ক্লাস, আইটেম, প্রফ পরীক্ষার মাঝে সময় পেলেই ঘুরে বেড়ানোর ঝোঁক থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৬৯ ব্যাচের দুই ছাত্রী সাকিয়া হক ও মানসী সাহা মিলে গড়ে তুলেছে ভ্রমণপ্রিয় নারীদের সংগঠন ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ। এবার তারা বেড়িয়েছে সারা দেশ ঘুরতে। তাঁদের ভ্রমণ-স্লোগান ‘নারীর চোখে বাংলাদেশ’। সাকিয়া ও মানসীর সঙ্গে এই ভ্রমণের প্রথম পর্বে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামসুন্নাহার ও ইডেন মহিলা কলেজের নাজমুন নাহার মুক্তা।
গত ৬ এপ্রিল সকালে তারা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার, কাঁচপুর ব্রিজ পেরিয়ে তাঁরা পৌঁছায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায়। সেখানে ইউনাইটেড স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেয়েদের সঙ্গে তাঁরা মতবিনিময় করে। তাদের সমস্যার কথা শোনে। দুই দিন ধরে ঘুরে বেড়ায় ব্রাহ্মণপাড়া হস্তশিল্প, সদাসদি ভূঁইয়াবাড়ি, লোতাব্দি কাতানপল্লি, বাটিকগ্রাম, সাতগ্রাম জমিদার বাড়িসহ নানা জায়গায়। আড়াইহাজার থেকে রামচন্দ্রপুর ফেরি পার হয়ে ৮ এপ্রিল চলে যায় কুমিল্লার মুরাদনগর। ৯ এপ্রিল তারা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা যায় সেখানে কসবা বালিকা বিদ্যালয়ে মতবিনিময় করে। এরপরে গত ১১ এপ্রিল দুপুর ২টার দিকে তারা ঢাকা এসে পৌঁছায়।
তারা জানায়, বছরজুড়ে তাঁরা প্রতিটি জেলার দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান তো ঘুরে দেখবে, সেই সঙ্গে কথা বলবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে। এই যাত্রায় তারা হাজির হচ্ছে প্রতিটি জেলার অন্তত একটি স্কুলে। সেখানে মেয়েদের জন্য আয়োজন করা হচ্ছে সেমিনার। এতে তারা স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালীন বিভিন্ন সমস্যা, স্বাস্থ্যসচেতনতা, আত্মরক্ষা, ভ্রমণসহ নানা বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলে, তাছাড়া নিজেদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতাও শোনায়। নিজেরা শোনে স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের সমস্যার কথা, দেয় সমাধান।
সাকিয়া বলেন, ‘স্কুটিতে প্রথম যাত্রা বলে ভ্রমণের প্রথম ধাপে আমরা অপেক্ষাকৃত পরিচিত তিনটি জেলা নির্বাচন করেছি, যেখানে আমাদের পরিচিত মানুষের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। এবারের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়েই আমরা সারা দেশের ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজাব।’
পরিচিত মানুষের সহযোগিতা নিয়েই তাঁরা ৬৪ জেলার ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। মতবিনিময় করেছেনও তাঁদের সহযোগিতায়। প্রতিদিন তাঁরা সকাল থেকেই বেরিয়ে পড়ে। প্রথমে কোনো একটি স্কুলের মেয়েদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। এরপর স্কুটি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ায় সে এলাকা।
কিছুদিন আগে তাঁরা স্কুটি দুটি পেয়েছে কর্ণফুলী স্কুটির সৌজন্যে। তাঁদের ভ্রমণ পরিকল্পনা শুনেই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে আসে। তখনো দুজনের একজনও ঠিকমতো স্কুটি চালাতে পারতো না। তবে দিন গড়াতেই মাঠ কিংবা ফাঁকা জায়গায় নির্ঝঞ্ঝাট চালাতে শিখে ফেলে। কিন্তু রাজপথে নামলেই বিপদ! রাজধানীর রাস্তায় মনের জোরে চালায় কিছুদিন। একটু একটু করে হাত পাকিয়ে বেরিয়ে পড়লেন দেশের পথে।
মানসী সাহা বলে, ঘুরতে ঘুরতে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যার অধিকাংশই ইতিবাচক। চারজন মেয়ে স্কুটি চালাচ্ছে দেখে পথে অনেকে হাঁ করে চেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই বাহবা দেন তাঁদের সাহসের, উদ্যোগের জন্য।
এভাবেই এগিয়ে চলছে তাঁদের দেশ দেখা। যাত্রাসঙ্গী দুটি স্কুটি। প্ল্যাটফর্ম এর পক্ষ থেকে নারীদের জন্য তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
সংবাদদাতা: বনফুল রায়
View Comments (71)
??
You are most welcome.
A lady Doctor going to office.
in this land of courageous women and incompetent men, all my role models has always been a female. And here's another (or two) example.
Go Girl! :)
Arifa Rahman
সাধুবাদ জানাই।
Very nice
Zannatul Mawa Maya
Tonni Chanda
sakia r manosi.... go ahead
খাগড়াছড়ি আসলে দেখা করে যেও ...!!!