X

চমেকহা’য় প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের অস্ত্রোপচার

 

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, বৃহস্পতিবার, ২১মে, ২০২০

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন। গত ১৭ ই মে, বিভাগটির ইউনিট এক এর তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাবরিনা মেহের ও ডা. নিশাত।

গত ১৭ ই মে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগে ডেলিভারির ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয় প্রিয়া দাশ (১৮)। তার কোভিড-১৯ এর উপসর্গ ছিল। রোগীর স্বামী নারায়ণগঞ্জ ফেরত, বাড়ি সীতাকুণ্ড। উপসর্গ থাকায় কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. সাবরিনা মেহের ও সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. নিশাত সম্পূর্ণ পিপিই পড়ে রোগীকে পরীক্ষা করেন। রোগীর বাচ্চার অবস্থান (position) ঠিক না থাকায়, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহানারা চৌধুরীর পরামর্শে সিজারিয়ান সেকশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গাইনী বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাবরিনা মেহের ও সহকারী সার্জন হিসেবে ছিলেন ডা. নিশাত। অস্ত্রোপচারের সময় এনেস্থেসিয়া দেন ডা. তারেক।

     ছবিঃ সংগৃহীত

কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার নিয়ে গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি জানান,
“অপারেশনের সময় গাইডলাইন অনুযায়ী সাকার ও কটারি মেশিন ন্যুনতম ব্যবহার করা হয়েছে। অপারেশন শেষে অপারেশন থিয়েটার ৮ ঘন্টা জীবাণুনাশক দিয়ে বন্ধ রাখা হয়। তবে কোভিড-১৯ রোগীর অপারেশনের জন্য নেগেটিভ প্রেসার সিস্টেম আমাদের কোন ওটিতেই নেই।”

অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার পর মা এবং বাচ্চা দু’জনই সুস্থ থাকায়, তাদেরকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। পরবর্তীতে তারা বাড়ি চলে যায়। গত ২০ মে, নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে প্রিয়া দাশের কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি জানান,
“চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের পুরো টিম সাহসিকতার সাথে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে প্রমান করল, কোন রোগী আমাদের যত্নের বাইরে নয়; সে হোক কোভিড বা নন কোভিড।
কেননা আমরা জানি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই এক বিশাল জনগোষ্ঠীর শেষ ভরসার স্থল।”

তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের কর্মতৎপরতা নিয়ে বলেন,
“চমেকের গাইনী বিভাগে ভর্তিযোগ্য কোন রোগী ফেরত পাঠানোর কোন উদাহরণ নেই। এ বিভাগের প্রতিটি ইউনিটে অনেক সাসপেক্টেড জ্বরের রোগীর প্রতিদিন নরমাল ডেলিভারি/ সিজার হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে এটাই প্রথম পজিটিভ!
এখানে কর্তব্যরত নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য স্বাস্থকর্মীরা অপারেশনে সহায়তা করার সময় সম্ভাব্য কোভিড রোগী হওয়া নিয়ে একবারও প্রশ্ন তুলেনি।”

সাসপেক্টেড কোভিড-১৯ রোগী হওয়ায় চিকিৎসা না পাওয়ার ঘটনা সামাজিক গণমাধ্যমে সবসময় দেখা গেলেও, কর্তব্যরত চিকিৎসদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের ঘটনাগুলো অজানাই থাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

নাজমুন নাহার মীম:
Related Post