X

আমার চেম্বার কেন বন্ধ?

শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০

হালে মিডিয়ায় সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন- ডাক্তারদের চেম্বার কেন বন্ধ? শর্দি -কাশির রোগীদের কী হবে?

প্রেক্ষাপটটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আমি একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। আমি একটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের শিশুরোগের কনসালট্যান্ট। প্রতিদিন প্রায় গোটা পঞ্চাশেক শিশুরোগী বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ মিলে আমাকে দেখতে হয় এই করোনার কালে। স্বাভাবিক সময়ে সংখ্যাটি দুই থেকে তিন গুন। এদের শতকরা প্রায় ষাট ভাগ রোগী স্বাসতন্ত্রের সমস্যা অর্থাৎ সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত থাকে।

প্রতিদিন আমার যাওয়া আসা থেকে শুরু করে যত রোগীর সংস্পর্শে আসতে হয় তাতে আমার কতটা করোনার ঝুঁকি আছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন ডাক্তাররা হচ্ছেন সুপার স্প্রেডার অর্থাৎ একজন ডাক্তার সংক্রমিত হলে তার থেকে অনেক রোগী আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চেম্বারে এই দেশের মানুষকে সামাজিক দূরত্বে বজায় রেখে বসবেন সেটা আকাশ-কুসুম কল্পনা। তার মানে হলো আমার চেম্বার খোলা থাকলে সেটা হবে এই ভাইরাস সংক্রমনের অভয়ারণ্য।

সস্তা জনপ্রিয়তা আর সংবাদ পণ্যের কাটতি বাড়ানোর গতানুগতিক কুপ্রবৃত্তি থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া গুলো। এই অনভিপ্রেত উস্কানিমূলক আলোচনার বড় কুফল হচ্ছে মূল ফোকাস থেকে স্টেক হোল্ডারদের দৃষ্টি সরে যাওয়া।

সহজ বিষয় – আমি চেম্বার বন্ধ রেখেছি আমার রোগী এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষার জন্য। আমি অর্থলোভী বা শুধু নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবলে চেম্বার খোলা রাখতে পারতাম, কারণ আমি তো হাসপাতালে রোগীর সংস্পর্শে এসে ইতোমধ্যেই ঝুঁকিতে আছি।

এই সময়ে সবার উচিত জরুরী স্বাস্থ্য সমস্যা ছাড়া হাসপাতাল কিংবা ডাক্তারের চেম্বারে না যাওয়া। তাই আমার চেম্বার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত রোগী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে, সমাজে ছড়ানোর ঝুঁকি কমানোর প্রয়োজনে।

স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, ঘরে থাকুন, করোনা ইস্যুতে অবাঞ্চিত লোকের অপরিনামদর্শী কথায় কান দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
লেখাঃ ডা. মোঃ হুমায়ুন শিকদার

জামিল সিদ্দিকী: A dreamer who want to bring positive changes in health sector in Bangladesh.
Related Post