X

হাতুড়ীয় সার্কাসঃ পর্ব ১

হাতুড়ে ডাক্তারদের ডাটাবেস সংগ্রহের লক্ষ্যে “কোয়াক হান্ট” নামে প্ল্যাটফর্মের উদ্দোগ্যে যে ফেসবুক ইভেন্ট করা হয়েছে সেখান থেকে এমন কিছু ডাটা বা ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে যা দেখে শুধুই একটা শব্দই মনে আসে, “সার্কাস”! টাকা দিয়ে কেনা বা কয়েকদিনের ট্রেনিং নিয়ে নাম জানা অজানা অনেক ডিগ্রির সমারোহ এই সব হাতুড়ে ডাক্তারদের নামে পিছে। দেখলে মনে হয়, উনি তো বিশাল ডাক্তার, কারও আবার ৪-৫ টা চেম্বারও আছে। কেউ কেউ আবার ভিজিটিং কার্ডে লিখে রাখে স্বর্ন পদক প্রাপ্ত ডাক্তার। BMDC এর নীতিমালা অনুযায়ী নামের আগে ডাক্তার লেখা অবৈধ হলেও এরা নামের আগে ডাক্তার লাগিয়ে এবং তার সুন্দর নাম খানার পিছে ১০-১২ টা নাম না জানা ডিগ্রি ঝুলিয়ে রাখে। কেউ কেউ আবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হয়েও ডাক্তার 🙂

আমাদের হাতে থাকা সেই সব মহান ডিগ্রিধারীদের উতসর্গ করে এই স্যাটায়ার!

এই মহান ব্যক্তিদের আসলে কোয়াক বা হাতুড়ে ডাক্তার বললে হাতুড়ে ডাক্তার শব্দটাও লজ্জা পায়। কারন, ডাক্তার না হয়েও নামের আগে গর্বের সহিত ডাক্তার লাগিয়ে, গাইনী থেকে শুরু করে সকল বিষয়ে অভিজ্ঞ বা স্পেসালিষ্ট লিখে, ভিজিটিং কার্ডে যতখানি জায়গা আছে সবটুকুতে ইচ্ছেমত ডিগ্রি (মাঝে মাঝে SSC,HSC!!) লাগানো এই সব ব্যক্তিদের আমি শুধু “হাতুড়ী” হিসেবেই অভিহিত করতে চাই। কারন এরা জনগনের মাথায় হাতুড়ী দিয়ে বাড়ি মেরে আজ ডাক্তার। কিছু পারুক আর নাই বা পারুক, কিভাবে হাতুড়ী মেরে চেম্বারের চিপায় রোগী এনে হাতুড়ে চিকিৎসা দিতে হয়, এই ব্যাপারে তারা স্পেশালিষ্ট!

হাতুড়ী নাম্বার ওয়ান-ডাঃ মোঃ নাসিমুল ইসলাম!

আজকের প্রথম পর্বে যে মহান ব্যক্তিকে নিয়ে আলোচনা করবো তিনি তার সাইনবোর্ড বা ভিজিটিং কার্ডে প্রায় ৬ রকমের ডিগ্রির কথা গর্বের সাথে উল্লেখ করেন। এমনকি বিদেশ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষন প্রাপ্ত। কলিকাতা থেকে (কেউ আবার কলিকাতা হারবাল মনে করিবেন না! কলিকাতা বলতে কলিকাতা) কমিনিউটি মেডিসিন ও সার্জারী”তেও বিশাল ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তার সাথে দেখা হলে একদিন কমিনিউটি মেডিসিনের ডেফিনেশন জিজ্ঞেস করার ইচ্ছা আছে! আশা করি কলিকাতা থেকে তিনি কমিনিউটি মেডিসিনের বিশাল ডেফিনেশন খানাও মুখস্ত করিয়াই এসেছেন।

তার প্রেস্ক্রিপশনের উপরের অংশ টুকু দেখেন, সেখানেই সব লেখা আছে।

তার মেইন চেম্বার ৪ টা! চিপায় চাপায় আরও দুই একটা থাকতে পারে। মোবাইল নাম্বারও দেয়া আছে। কেউ আবার দুষ্টুমি করে মিসকল দিবেন না 🙂 খুব বিজি মানুষ কিন্তু!

শিশু রোগ,স্ত্রী রোগ সব বিষয়ে পারদর্শী!

এবার একটা সিরিয়াস কথা বলি, সাধারন গরিব, অশিক্ষিত মানুষ তো আর এমবিবিএস বোঝে না, তারা জানে যার নামের পরে যতবেশি ডিগ্রি সে তত ভাল ডাক্তার। আর যদি ডিগ্রির সাথে একটু বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন দেশের নাম লাগানো থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আমাদের আজকের হাতুড়ী মনের মানুষ সেই বিসনেজটা ভালই বুঝছেন। এ তো শুধু একটি উদাহরন! আপনার বাড়ির পাশে এরকম ডিগ্রিধারী ডাক্তারের অভাব নাই, যাদের নামের সাথে শুধুই ডিগ্রি কিন্তু কিসের যে ডিগ্রি তা তারা নিজেরাও জানে না।

ওয়েব টিম:
Related Post