X

“লন্ডন পেশেন্ট”: এইচআইভি থেকে মুক্তি পাওয়া বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যক্তি

লন্ডন পেশেন্ট খ্যাত এক রোগী বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পর এইচআইভি ইনফেকশন থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন, যা এর আগে কেবল বার্লিন পেশেন্ট খ্যাত এক রোগীর ক্ষেত্রে সম্ভব হয়েছিল। ৪ মার্চ ন্যাচার সাময়িকীর এক জার্নালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

লন্ডন পেশেন্ট এর প্রকৃত পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয় নি। ২০০৩ সালে তার এইচআইভি ইনফেকশন প্রথম প্রকাশ পায় এবং ২০১২ সাল থেকে তিনি এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ নেয়া শুরু করেন। ঐ বছরই তার হজকিন্স লিম্ফোমা (রক্তের এক ধরণের ক্যান্সার) ধরা পড়ে, যার চিকিৎসা হিসেবে তিনি ২০১৬ সালে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত হন।

১২ বছর আগে জার্মানির বার্লিন শহরে আমেরিকান টিমথি রে ব্রাউনকে ক্যান্সারের চিকিৎসায় দুইবার বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, যা তাকে শুধু ক্যান্সার নয়, এইচআইভি থেকেও মুক্তি দিয়েছিল। তারপর থেকে ডাক্তার এবং বিজ্ঞানীগণ এইচআইভি/এইডস এর চিকিৎসার জন্য একই রকম গবেষণা বহুবার করে বিফল হয়েছেন।

টিমথি ব্রাউন/বার্লিন পেশেন্ট, এইচআইভি থেকে মুক্তি পাওয়া বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি

লন্ডন পেশেন্ট এর বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের বেলায়ও ডাক্তারগণ একইভাবে ক্যান্সার এবং এইচআইভি দুটাই নিরাময় করার চেষ্টা করেন। তাই তারা এমন দাতা নির্বাচন করেন, যার দেহে এক বিশেষ ধরনের জিন মিউটেশনের ফলে এইচআইভি রেজিস্ট্যান্স বর্তমান। বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পর লন্ডন পেশেন্টও দাতার সেই জিন মিউটেশন এবং এইচআইভি রেজিস্ট্যান্স লাভ করেন।

বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পর থেকে লন্ডন পেশেন্ট এর ওষুধ নেয়া বন্ধ করেছেন। সাধারণত ওষুধ বন্ধ করার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই দেহে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বিগত ১৮ মাস যাবৎ তার শরীরে এইচআইভির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় নি, যা নির্দেশ করে তিনি এখন এইচআইভি/এইডস থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।

এ চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল এবং সারা বিশ্বে সফল রোগীর সংখ্যা মাত্র দুই। তবুও এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক মাইলফলক সৃষ্টি করেছে এবং প্রমাণ করে যে, এইচআইভি/এইডস এরও চিকিৎসা সম্ভব।

প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটার:
সামিউন ফাতীহা
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর

Platform:
Related Post