X

রক্তদান করে ২৪ লক্ষাধিক প্রান বাঁচানোর সুপারহিরো হ্যারিসনের গল্প

একজন মানুষ কতজন মানুষকে বাঁচাতে পারে? কী ধারণা আমাদের? ১০০/৫০০/১০০০/১০০০০/ এক লক্ষ?
এমন এক লোকের কথা বলছি যিনি ২৪ লক্ষাধিক প্রাণ বাঁচিয়েছেন আজ অবধি। ওনাকে বলা হয় Man With The Golden Arm আসল নাম জেমস ক্রিস্টোফার হ্যারিসন।

১৯৩৬ এ জন্ম নেয়া ৮১ বছর বয়ষ্ক এই অস্ট্রেলিয়ান বুড়ো ১৩ বছর বয়সে এক মেজর চেস্ট সার্জারীর টেবিলে শুয়েছিলেন। বাঁচার আশা ছিলোনা কিন্তু ১৩ লিটার রক্তের বিনিময়ে হ্যারিসন আবার পৃথিবীর আলোতে চোখ মেলেন।

সেদিন প্রতিজ্ঞা করলেন যত দিন বাঁচবেন অন্যকে রক্ত দিয়ে যাবেন। ১৮ বছর বয়েস থেকে রক্ত দেয়া শুরু হ্যারিসনের। ৬/৭ বার দেয়ার পরে হঠাৎ হেমাটোলজিস্ট রা বলে হ্যারিসনের রক্তরস খুবই দুর্লভ শক্তিশালী ও স্থায়ী anti D antibody তে পরিপূর্ণ। প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু Rh incompatibility তে সৃষ্ট rhesus disease এ বিশেষ করে HDN( hemolytic disease of the newborn ) এ মারা যাচ্ছে যার জন্য প্রধানত দরকার ছিলো এই রকম একটি এন্টিবডি।

ওই সময়টায় বিজ্ঞানীরা এরকম কৃত্রিম একটা এন্টিবডির খোঁজ করছিল আর এরকম ন্যাচারাল একটা উপাদান হঠাৎ পাবার পরে হ্যারিসনের জীবনকে সাথে সাথে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ইন্সুরেন্স করা হয়। রক্ত দান ৪ মাসে একবার করা নিরাপদ হলেও শুধুরক্তরস ২ সপ্তাহ পরপর দেয়া যায় এমনকি প্রয়োজনে সপ্তায় দুবার করেও দেয়া যায়। হ্যারিসনের কেবল রক্তরস নেয়া হত। ২০১১ সালে ওনার ১০০০ বার ও এ বছরের মে মাসে ১১৭৩ বার পূর্ণ হলো।

২০১০ সালের রিপোর্টে বলা হয় হ্যারিসনের প্লাজমা দিয়ে আনুমানিক বিশ লক্ষাধিক নবজাতক বেঁচেছিল। ২০০৩ এ গিনেজ রেকর্ড করা এই লোক অনেক বুড়ো হয়ে গেছে আজ। নিজের রক্তে বাঁচিয়ে তোলা ছেলে মেয়েদের দেখে বুড়ো ক্রিস্টোফার হ্যারিসনের চোখে পানি আসে। কোলে নিয়ে বাচ্চাগুলোকে জড়িয়ে ধরে আর গোপনে দীর্ঘ প্রশান্তির শ্বাস নেয়। আমরা যারা উচ্চ শিক্ষিত এমনকি অনেকে ডাক্তার হয়েও রক্তদানকে ভয় করছি তাদের জন্য এই ক্রিস্টোফার আদর্শ হয়ে থাকবে।

ডাঃ আসির মোসাদ্দেক সাকিব
চমেক ১১-১২

ওয়েব টিম:
Related Post