X

প্ল্যাব নিয়ে যত কথা: পর্ব ৫

লিখেছেন: ডা. সামিয়া ফারহিন

৩ এপ্রিল, ২০২০

আমি যখন এ লেখাটি লিখছি, তখন একজন চিকিৎসকের মা বিনা চিকিৎসায়, আই রিপিট, বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন। আমি কোনদিন কল্পনাও করতে পারবো না, তার মনের ব্যাথাটুকু। হতে পারে, তার ক্ষমতা থাকলে সমস্ত পৃথিবী উলট পালট করে দিতেন। হয়ত চাইতেন পৃথিবীর সবাই মারা যাক, যে পৃথিবীতে তার মা নাই, সেই পৃথিবীর সব শেষ হয়ে যাক। ডাক্তার হওয়ার মূলমন্ত্র মানুষ হওয়া৷ চোখের সামনে কাউকে শেষ হতে দেখা না। শ্রদ্ধেয় দিলীপ স্যারের কথা মত, “তোমাদের আল্লাহ রেয়ারেস্ট পাওয়ার দিছে মানুষের জন্যে কিছু করার, দুনিয়ায় কোটি কোটি মানুষ আছে, তাদের কিন্তু দেয় নাই এই ক্ষমতা। এইটার জন্যে স্রষ্টার কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবা।” কথা সত্যি। এই পাওয়ার কাজে লাগাবেন প্লিজ।

আজকে প্ল্যাব ২ এর লেখাপড়া নিয়ে লেখার কথা। আজকে তাই শুধু পড়াশোনার কথা হবে। তার আগে আপনাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিই।
অনেকে আমাকে বলছেন, এই লেখাগুলো আমি ইংরেজিতে কেন লিখছিনা, তাহলে সবাই পড়তে পারত। এই কথার উত্তরে বলব, আমি আগ্রহী নই। এই লেখার মূল উদ্দেশ্য বিগিনারদের জন্যে, যারা দেশের বাইরে পা দিতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, তাদের সাহস দেয়া। প্ল্যাব রিলেটেড সব পোস্ট পরামর্শ ইংরেজিতে দেয়া সব জায়গায়৷ আমার দেশের ডাক্তারদের জন্যে আমি বাংলায় কিছু লিখলে হয়ত তাদের বুঝতে সুবিধা হবে, সাহস পাবেন। তা-ই বাংলায়ই লিখতে ভালো লাগছে।

অনেকেই লিংক চাচ্ছেন বিভিন্ন OET materials, plab 1 materials এর। আমি নিজেও কিন্তু এইগুলা ফেসবুকে সার্চ দিয়েই পেয়েছি। আমার আগেও সিনিয়ররা প্ল্যাব দিয়ে, উৎসাহ দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। তাদের গুগল ড্রাইভ লিংক শেয়ার দিয়েছেন। আমি নিজে যখন শুরু করেছি, তখন কিছুই জানতাম না। যারা আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানানোও এই লেখার উদ্দেশ্য। তাদের গুলো থেকেই কালেক্ট করেছি। নিজে কোনকিছু গুগল ড্রাইভে সেভ করি নাই। তাই আমার গুলো শেয়ার দিতে পারছি না। আপনারা একটু খোঁজাখুঁজি করলেই আশা করি আমার মতই পেয়ে যাবেন।

অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, পিডিএফ কি প্রিন্ট করা আবশ্যিক কি না। না, কখনোই না। সবাই পার্সোনাল ট্যাব, মোবাইল, ল্যাপটপ এ পিডিএফ পড়েন। আমার সিভিয়ার ফটোসেনসিটিভির জন্যে আমি পড়তে পারি না। এটা একান্তই যার যার কম্ফোর্টের ব্যাপার।

এবার পড়ালেখা শুরু করি৷

প্রথমে প্ল্যাব ২ এক্সাম প্যাটার্নটা আমি আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। প্ল্যাব ২ একদমই আনপ্রেডিক্টেবল এক্সাম। দুর্দান্ত প্রিপারেশন থাকলেও আপনি দুম করে ফেল করে ফেলতে পারেন। একটা কথা আছে, যে প্ল্যাব ২ পাশ করছে সে জানে না কেমনে, আবার যে ফেইল করছে সে-ও জানেনা কেমনে৷

অনেকে অনেক অভিমত দিলেও আমার কাছে প্ল্যাব ২ more or less ফাইনাল প্রফের লং কেসের মত লেগেছে। পার্থক্য হল, এখানে আপনি হিস্ট্রি এক্সামিনেশন, ম্যানেজমেন্ট সবকিছু করবেন এক্সামিনার এর সামনে, এক্সামিনারের সাথে একটা কথাও না বলে। অনেকটা আউটডোরে অথবা চেম্বারে আমরা যেভাবে রোগী দেখি তেমন।

পেশেন্ট প্রায়োরিটি ফার্স্ট। ১৮ টা স্টেশন থাকে, প্রত্যেকটা স্টেশনে ১৮ জন এক্সামিনার থাকেন। প্রত্যেকটায় ১২ মার্ক্স, প্রতি স্টেশনে পাশ মার্ক ৬-৭ এর মধ্যে উঠানামা করে। পাশ মার্ক্স ১২০ থেকে ১৩০ এর মধ্যে উঠানামা করে। পাশ করতে হলে আপনাকে সর্বনিম্ন ১১ স্টেশনে পাশ করতে হবে এবং নূন্যতম পাশ মার্ক পেতে হবে। কিউবিকলে ঢুকার আগে ২ মিনিট সময় দিবে টাস্ক পুরোটা পড়ার জন্যে এবং মাথায় একটা প্লট রেডি করতে। মেইন স্টেশন ৮ মিনিট সময়, ৬ মিনিটে আপনাকে ওয়ার্নিং বেল দিবে। আপনি খাতা কলম কিছুই ব্যবহার না করে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পেশেন্টের সাথে কথা বলবেন।

প্ল্যাব ২ এক্সামে তিনটা পার্ট

প্রথম হিস্ট্রি। এটায় ৪ মার্ক থাকে।
এখানে আপনাকে রোগীর আদি-অন্ত জানতে হবে। কি সমস্যা নিয়ে আসছে, সেটা ইলাবোরেট করবেন। Differential diagnosis must. আগে এমন হয়েছে কি না, ফ্যামিলিতে আছে কি না, পেশেন্ট স্মোক, ড্রিংকস করে কি না ইত্যাদি ইত্যাদি। এক্সামিনেশন করবেন, ভাইটালস এবং স্পেসিফিক এক্সামিনেশন। এখানে খুব কেয়ারফুল থাকতে হবে আপনি ইরিল্যাভ্যান্ট প্রশ্ন করছেন কি না। আন্তাজে প্রশ্ন করলে আপনার নাম্বার কাটা যাবে। তবে হিস্ট্রিতে মোটামুটি সবাই মার্ক উঠাতে পারে।

এরপরে ম্যানেজমেন্ট

এটায়ও ৪ মার্ক থাকে। যারা ফেইল করে বেশিরভাগই এই স্টেমে ফেল করে। ম্যানেজমেন্ট শুরু হয় ডায়াগনোসিস থেকে। এরপর আপনি রোগী এডমিশন দিবেন না বাড়ি পাঠাবেন নাকি রেফার করবেন, আপনার সিনিয়র ডাক্তারকে ইনফর্ম করবেন, কি কি টেস্ট করবেন, কি ওষুধ দিবেন, ওষুধ না দিলেও রোগী বাড়ি গিয়ে কি কি লাইফস্টাইল মেনটেইন করবে, এক্সারসাইজ, ডায়েট কি কি করবে,বাসায় কোন ইমার্জেন্সি হলে ইমার্জেন্সি সাইন কি কি হবে, তখন কি করবে, এইসব মিলায়ে ম্যানেজমেন্ট।

মানুষ ফেইল করে এই স্টেমে কারন আগে বাহুল্য হিস্ট্রি নিতে নিতে সময় শেষ করে ম্যানেজমেন্ট এ সময় পায় ১ মিনিট! আর ইউকে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পূর্ণ আলাদা।

দেশে আপনি কার্ডিয়াক কন্সাল্ট্যান্ট হলেও সেখানে আপনি প্ল্যাব টু, জুনিয়র ডাক্তার। আপনার এখতিয়ার হল, প্যারাসিটামল দেয়া, অক্সিজেন দেয়া, কার্ডিওলজি কে ইনফর্ম করা, আর পেশেন্টকে বলা যে আপনার এইরকম হতে পারে বলে আমরা ধারনা করছি৷

এইখানেই সবাই ফেইল করে বেহুদা কথা বলে অথবা জ্ঞান জাহির করে। প্ল্যাব টু যদি বলে, “দেখ আমি তো বুঝতে পারছি না তোমার কি অসুবিধা, তবে হার্ট অ্যাটাক হতেও পারে। আমি আমাদের কনসালটেন্ট এর সাথে কথা বলে তোমাকে জানাচ্ছি।” তাহলেও পাশ করে যাবেন।

কিন্তু যদি বলেন, “শোন তোমার তো Ramsay hunt syndrome হয়েছে, তোমার এটা ওটা করা লাগবে।” তাহলে জায়গায় ফেইল।

ঠিক এরকম ফার্স্ট ভিজিটে আপনি ক্যান্সার, টিবি, টিউমার, জেনেটিক ডিজর্ডার এই কথাগুলো কখনোই ডায়াগনোসিস হিসেবে উচ্চারণ ও করবেন না। আপনার রোগী প্রশ্ন করলে বলতে পারেন, এইগুলাও হতে পারে, কিন্তু আমরা শিওর না, আমাদের কিছু টেস্ট করতে দাও, আর সিনিয়র দের সাথে কথা বলতে দাও। তোমাকে জানাবো।

কখনো জ্ঞান জাহির করবেন না। আপনার পেশেন্টকে প্রশ্ন করতে দিন। আপনি কোন স্টেশনে পাশ করবেন কি না, সেটা বোঝার সহজ উপায় হল, কোন স্টেশনে পেশেন্ট যদি আপনাকে এটলিস্ট পাঁচটা প্রশ্ন করে, সে স্টেশনে আপনি পাশ। Let them speak.

এরপর ইন্টারপার্সোনাল স্কিল

এখানেও ৪ মার্ক থাকে। এখানে সবকিছু কাউন্ট করা হয়। এমনকি আপনার বডি মুভমেন্ট, আই কন্টাক্ট, গলার স্বরের উঠানামা, মেডিকেল টার্ম ব্যবহার না করা এইগুলাও। এখানে বাংলাদেশী সব ডাক্তারদের প্রবলেম হয়। কেউ মার্ক তুলতে পারে না তেমন। এর কারন আমার মনে হয়, আমাদের মুখস্থ বিদ্যা শিক্ষা পদ্ধতি। আমরা গড়গড় করে মূখস্ত করি আর ভাইভা রিটেন এক্সামে উগড়ায় দেই। পেশেন্টের সাথে টু ওয়ে কমিউনেকশন নাই। পেশেন্টের কোন প্রশ্ন আছে কি না, সে আমার কথা বুঝতে পারল কি না, সে কোন কিছু নিয়ে ওরিড কিনা, তার বাড়িতে কোন অসুবিধা আছে কি না, এইগুলা আমরা আমলেই নেই না। এর প্রত্যেকটা কথা আপনাকে জানতে হবে। আপনি পেশেন্টের সাথে প্রভুসুলভ আচরণ করতে পারবেন না।

যতক্ষন পর্যন্ত না আপনার এক্সামিনার শিওর হচ্ছেন যে আপনি নিজে উপলব্ধি করতে পারছেন যে এই রোগী বিপদে পরেই আপনার কাছে আসছে, এবং আপনি আসলেই তার প্রতি সিম্প্যাথেসাইজ, তার আগ পর্যন্ত একটা নাম্বারও আপনাকে দিবেনা।

কি কি পড়বেন? কোথা থেকে পড়বেন?

প্ল্যাব ২ টপিকগুলো সবই ক্লিনিক্যাল ডে’ বেসিস। নিত্যদিন একটা জুনিয়র ডাক্তার যে সকল কেস দেখিতে পারে, তেমন কিছু। যেমন-
১। মেডিসিন, সার্জারি, গাইনী, পেডিয়াট্রিক্সের কিছু কেস থাকে যেখানে হিস্ট্রি, এক্সামিনেশন করে ইন্সট্যান্ট ডায়াগনোসিস করে ম্যানেজমেন্ট করতে হয়।
২। কাউন্সেলিং স্টেশন হল, কারো সাথে রিপোর্ট ডিসকাস করে, কাউকে ডিসচার্জ দেয়া, কারো মেডিসিন বুঝিয়ে দেয়া ইত্যাদি।
৩। ব্রেকিং ব্যাড নিউজ হলো, কারো ক্যান্সার রিপোর্ট জানানো, কারো আত্মীয় লাইফ সাপোর্টে আছে সেটা জানানো ইত্যদি।
৪। ইথিক্স স্টেশন। খুবই ট্রিকি। এখানে হতে পারে আপনার একজন কলিগ যিনি, ফেসবুকে একটা পেশেন্টের হিস্ট্রি নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। পেশেন্ট কনফিডেনসিয়ালিটি অনেক বড় বিষয় এদেশে। ঠিকঠাক মত কম্পলেইন করলে আপনার লাইসেন্সও চলে যেতে পারে।
৫। টিচিং স্টেশন, এখানে জুনিয়র ডাক্তার অথবা মেডিকেল স্টুডেন্টদের এক্সামিনেশন শিখাবেন, BLS শিখাবেন।
৬। ম্যানিকিন স্টেশন, এখানে একিউট কেস যেমন acute asthma, pph etc হাতে কলমে ম্যানেজ করতে হয়।
৭। এক্সামিনেশন ঘুরায় ফিরায় যে কোন স্টেশনের সাথেই দিতে পারে।

সব একাডেমি নোট দেয়, সম্ভবত স্যামসন ছাড়া। Swamy তে বুকিং ইমেইল দিলেই আপনাকে স্টাডি ম্যাটেরিয়াল ইমেইল করে দিবে। এস্পায়ারের নোট তূলনামূলক কন্সাইসড। আর ওরা রেগুলার আপডেট করে। এক্সামিনেশন এর জন্যে Geeky medics, imedics, Bromley video, Ankur video দেখবেন।

এর বাইরে কি পড়বেন?

nhs.uk website, ★★★

আর কিছু না পড়লেও এই ওয়েবসাইট দেখবেন। NHS এত বছর ধরে, এত কষ্ট করে এই ওয়েবসাইটে এত ইনফরমেশন দিচ্ছে, আর আপনি একাডেমির দুই তিনটা নোট পড়েই পাশ করে ফেলবেন!!

nice guidelines.

এন্টিবায়োটিক, একিউট ম্যানেজমেন্ট সব এই ওয়েবসাইট থেকে দেখবেন।

Good medical practice GMC

এই সাইট ইন্টারপার্সোনাল স্কিলের জন্যে দেখবেন।

এছাড়াও অনেকে ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম বইটা রেকমেন্ড করে। হামিদের নোটস ফার্স্ট টু লাস্ট পড়ে। আমি কিনেও খুলেও দেখার সময় পাই নাই। NHS website আমার কাছে মোর দেন এনাফ মনে হয়েছে। সহজ কিছুই মুখ দিয়ে আসতে চায় না, বেশি পড়লে তো নাই হয়ে যাবে! এই ভয়ে বাদ দিছি শেষমেশ।

কিভাবে পড়বেন?

একটা গ্রুপ করবেন। ২ থেকে ৩ জনের। তাদের সাথে প্রাকটিস করবেন। গ্রুপ না করতে পারলেও অসুবিধা নাই। একাডেমিতে গিয়ে দেখবেন মানুষজন পড়ালেখা করছে। যে কারো পাশে গিয়ে বলবেন, তুমি কিছু মনে না করলে তোমার সাথে পড়তে পারি? দ্যাটস ইট। কেউ কোনদিন না করবে না।

কতক্ষণ পড়বেন?

যতক্ষণ পারেন। প্রাকটিস প্রাকটিস প্রাকটিস।

মক টেস্ট কোথায় দিবেন?

অনলাইনে অনেকে মক নেন। লাইভ মক শুধু একাডেমিগুলোতে দেয়া যায়। আমার মতে আপনার অপশন থাকলে লাইভ মকই দেন। ইন্টারপার্সোনাল স্কিলের প্রাকটিস, আই কন্টাক্ট এইগুলা অনলাইন মকে প্রাকটিস হয় না। অনেকের কাছে অনলাইন মক এফেক্টিভ। তারা Plab strategy, Dr Rema, Dr Imran, Dr Mo এদের কাছে অনলাইনে মক দেন। মক টেস্ট পরীক্ষার ১ সপ্তাহ আগে শেষ করবেন। পরীক্ষার আগের শেষ ৭-১০ দিন কোন মক দিবেন না।

এক্সামের ড্রেসকোড

ছেলেরা ফর্মাল শার্ট, প্যান্ট, সুজ পরবেন। নো টাই, নেভার। মেয়েরা সাধারণত যা পরেন, তা-ই পরবেন। ইন্ডিয়ান এক মেয়েকে শাড়ি পরেও এক্সাম দিতে দেখেছি। সালোয়ার কামিজ পড়লে ওড়না ফিক্সড করবেন। চুল খোলা রাখবেন না। যারা হিজাব পরেন, তারা তা-ই পরবেন। বোরকা / লং ড্রেস পরলেও সেটাই পরবেন। এখানে দেশের মত আপনাকে কেউ বলবে না, কান না বের করে রাখলে এক্সাম দিতে দিব না! যা-ই পরেন, গোছানো ইস্ত্রি করা, পরিপাটি হয়ে এক্সাম দিতে যাবেন। আরো জানতে চাইলে
https://www.gmc-uk.org/registration-and-licensing/join-the-register/plab/plab-2-guide/what-can-you-expect-on-the-day

অনেকে বেশ হতাশায় পরে যান যে ইউকে তে কালচারের অসুবিধা, পোশাক নিয়ে অসুবিধা হবে। আসলে মোটেই এমনটা না। আপনি হাতমোজা, পা মোজা পরে, মুখ ঢেকে একা হেঁটে বেড়ালেও কেউ আপনাকে টেরোরিস্ট বলে ঝাপায় পড়বে না। No one cares.

এক্সাম ডে

এক্সামের আগেরদিন ৮ ঘন্টা ঘুমাবেন। সকালে ভালকরে নাশতা করে উবার কল দিবেন। ম্যানচেস্টার সিটিতে উবার ক্যাশ একসেপ্টেবল না। ওনলি কার্ড। আপনার কার্ড আগেই উবার অ্যাপে আপলোড করে রাখুন। স্টেশনে ঢোকার আগের ২ মিনিট খুব ঠান্ডা মাথায় টাস্ক পড়বেন, চিন্তা করবেন, কিন্তু টাস্ক কমন লাগলেও ডায়াগনোসিস মাথায় এডভান্স রেডি করে রাখবেন না। এটা খুবই রিস্কি।

এরপরে পরীক্ষা শেষ করুন, পাশ করুন, রেজিস্ট্রেশন করুন এবং ওয়েলকাম টু ইউকে

শেষ করব ছোট একটা গল্প দিয়ে। আমি সবসময়ই দেখতাম নাইজেরিয়ার ডাক্তারদের কাউন্সেলিং, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান, টু দ্য পয়েন্ট। সবারই। খুব আমেজিং! এক নাইজেরিয়ান মেয়ের সাথে আমার ভাল বন্ধুত্ব ছিল৷ তাকে একদিন এই কথাটা জিজ্ঞেস করলাম। নাইজেরিয়ান মেয়ে ম্যান্ডেলিন, ম্যান্ডেলিনের মতই সুরেলা গলায় হাসত। হাসতে হাসতে বলল, শোন আমাদের তো রিসোর্স কম, আমরা এটা পুষিয়ে দেই পেশেন্টের সাথে কথা বলে।আমি চুপ ছিলাম অনেকক্ষণ। সত্যিই তো, প্রয়োজনই যেখানে পূরণ হয় না, সীমিত যাদের সামর্থ্য, সে ঘাটতি একমাত্র মায়া দিয়েই পূরণ হতে পারে। যার কিছু নাই, শুধুমাত্র সে-ই প্রাণখুলে বলতে পারে তার সব আছে।

So live a life. Don’t hold grudge on your heart. Do something for others, oneday you will find your true happiness. Until then keep smiling and respect other.

কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে লিখুন। আর কোন বিষয়ে জানতে চাইলে কমেন্টে লিখুন, আমি আস্তে ধীরে সে বিষয়েও লিখব। ভাল থাকুন, ভাল রাখুন, আর সবাই সবাইকে সাহায্য করুন।

Hasta la Vista ☺

লিখেছেন,
ডা. সামিয়া ফারহিন
তায়রুন্নেসা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
সেশন: ২০১০-২০১১

Publisher:
Related Post