X

“ডায়াবেটিস” নিয়ে কিছু কথা

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ০৫ই নভেম্বর, ২০২০, বৃহস্পতিবার

ডায়াবেটিস অথবা বহুমূত্র রোগ একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি রোগ। ইনসুলিনের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মূলত একে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়ে থাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস।

মানবদেহের এক বিশেষ গ্রন্থি অগ্ন্যাশয় এর বিটা কোষের কাজ হলো ইনসুলিন নিঃসরণ করা। অগ্ন্যাশয়  থেকে নিঃসৃত এই হরমোন  ইনসুলিন, যার সহায়তায় রক্ত থেকে গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ  করে এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে।

কিন্তু টাইপ -১ ডায়াবেটিস এ এই বিটা সেলের বিরুদ্ধে অটো এন্টিবডি তৈরি হওয়ার দরুন বিটা সেল ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। অন্যদিকে টাইপ-২ তে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিনের রিসেপ্টর না থাকার কারণে নিঃসৃত ইনসুলিন তার কাজ করতে পারে না। ফলস্বরূপ রক্তে চিনি বা শর্করার অতিরিক্ত উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। তাই বলা যায়,  ইনসুলিনের প্রকৃত বা আপেক্ষিক ঘাটতিই হল এ রোগের মূল কথা।

এই রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। যেমন:

>ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া;

>অধিক তৃষ্ণা এবং বার বার মুখ শুকিয়ে যাওয়া;

> দুর্বলতা ও অবসাদ অনুভব করা ;

>পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করার পরেও ক্ষুধা লাগা;

>স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস পাওয়া ;

>শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ঘন ঘন সংক্রমণের কবলে পড়া।

উল্লেখ্য, ডায়াবেটিস রোগীর দেহে ইনসুলিনের অভাবে গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে না পারায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকায়  বার বার প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে গ্লুকোজ বের হয়ে যায়। আর এই জন্যই একে বহুমূত্র রোগ বলা হয়। ঘন ঘন প্রসাবের কারণেই রোগীর বারে বারে তৃষ্ণা পায়।

গ্লুকোজ-ই হলো কোষের খাদ্য কিন্তু গ্লুকোজ কোষে না পৌঁছাতে পারায় রোগীর খাবার গ্রহণ করার পরেও ঘন ঘন ক্ষুধা পায়। আর এই গ্লুকোজ ব্যবহার করেই দেহের কোষগুলো শক্তি উৎপাদন করে কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর দেহে ইনসুলিনের অভাবে গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে না পারায় প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন হয়না। ফলে রোগী অতিশয় দুর্বলতা অনুভব করে।

এসব বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে সহজেই চিহ্নিত করা যায় ডায়াবেটিস। আর যত আগে ডায়াবেটিস চিহ্নিত করা যাবে, তত দ্রুতই  প্রয়োজন সাপেক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। বর্তমান সময়ে এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যেখানে একজন ডায়াবেটিসের রোগী নেই। তাই এ বিষয়ে অধিক সতর্কতা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক
নুরুন্নাহার মিতু

হৃদিতা রোশনী:
Related Post