X

কর্তব্য নাকি মায়া?

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৮ই মে, ২০২০, শুক্রবার

সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকে মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। একজন ডাক্তারও ঠিক তেমনি কখনো বাবা, কখনো ছেলে, কিংবা কখনো মা বা মেয়ে প্রভৃতি সম্পর্কে আবদ্ধ। করোনার এই অবরুদ্ধতার মাঝেও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রাধান ডা. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী। তাঁর পেশাদারি দায়িত্ব ও মায়ার টানাপোড়েন ফুটে উঠেছে মেয়ের সাথে কথোপকথনে…

“মেয়ে: আব্বু তোমাকে আর রোগী দেখতে হবেনা।
বাবা: কেনরে মা?

মেয়ে: কেন তুমি জানোনা?
বাবা: অসুস্থ রোগীকে ফেলে আমি বাসায় বসে থাকতে পারবনা মা।

মেয়ে: কেন? অনেকেইতো দেখেনা! একটা দিন আমাদের সাথে বসে ইফতার করেছো তুমি?
বাবা: সবাই একরকম করলে অসহায় মানুষগুলো যাবে কোথায়? দেশের প্রতি একটা দায়িত্বওতো আছে।

মেয়ে: তোমার কিছু হলে দেশতো আরেকটা ডাক্তার পেয়ে যাবে(যদিও এমবিবিএস এর পরও তা পেতে অন্তত ১৪/১৫ বছর সময় প্রয়োজন)। আমরা যাব কোথায়? আমরাতো অসহায় হয়ে যাব। আমাদের কে দেখবে আব্বু? প্রতিদিন চিন্তায় কাটছে সময়। বিশেষ করে যতক্ষণ চেম্বারে থাকো ততক্ষণ চিন্তায় থাকি আমরা।
বাবা: এখনো নিশ্চুপ।

মেয়ে: তুমি কাল থেকে ক্লিনিক গেলে আমিও যাব। এটাই শর্ত। আমিও বসে থাকবো। কিছু হলে আমারো হবে। তোমাকে ছাড়া আমরা অসহায়। বাবাহীন এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কতো কষ্টের তা আমি কল্পনাও করতে চাইনা।
বাবা: নিশ্চুপ। কারন এসবের কোন উত্তর তার জানা নেই।

মেয়ে: একবার দেখো ডাঃ মঈন এর পরিবারকে। কি পেলেন তিনি? দেশের মানুষ বুঝলো তাকে? যাদের জন্য তুমি এতো কিছু করছো? শুধু অসহায় হয়ে গেল তার পরিবার। শহীদ হয়ে গেলেন তিনি।
বাবা: মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের প্রতি সহায় হবেন।

মেয়ে: এতো মহানতো আমি নই আব্বু। আমিতো এতো বুঝিনা। আমিতো স্বার্থপর। খুব স্বার্থপর। আমি চাই আমার আব্বু বেঁচে থাকুক। সুখে থাকুক। আমরা একা হতে চাইনা সুন্দর এই পৃথিবীতে।”

(মেয়ে আনিকা তাহসিনের ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগৃহীত ও পরিমার্জিত।)

Platform:
Related Post