X

করোনা ও বেঁচে থাকার যুদ্ধ – একটি প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন প্রকল্প

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১০ মে ২০২০, রবিবার

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর থাবায় স্থবির অর্থনীতি। ঘরবন্দি সর্বস্তরের মানুষ যার ব্যতিক্রম নেই সংক্রমণ ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকা বাংলাদশের ক্ষেত্রেও। একমাসেরও অধিক সময় ধরে চলতে থাকা সাধারণ ছুটির নামে অঘোষিত লকডাউনে সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী। কোভিড-১৯ এর চেয়েও ভয়ানক হয়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য কষ্ট।

কেউবা বাসা-বাড়িতে কাজ করতেন, কেউ দিন মজুর, কেউ বা ভিক্ষা করতেন, এমনি নানা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা খেটে খাওয়া, অর্ধভুক্ত, অভুক্ত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ লকডাউন বেঁচে থাকার নতুন যুদ্ধ।

এদিকে দেশের এ সংকটকালীন সময়ে উৎপাদিত খাদ্যশস্য ও অন্যান্য ফসল ক্ষেত থেকে মানুষের পাতে আসার মাঝে আছে নানা প্রতিবন্ধকতা। ন্যায্য মূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রি সংশয়ে। খাদ্য ও উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য ক্ষতির মুখে প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা।

একদিকে সংক্রামক রোগ অন্যদিকে খাদ্য সংকট এই দুইয়ের মাঝে বেঁচে থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাওয়া মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় ও প্রান্তিক কৃষকদের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে এগিয়ে আসে প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন।

তাঁদের এই কর্মপরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় পবিত্র রমজান মাসের ৩০ দিন দৈনিক ৭০০ জন দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়, যার কাঁচা মাল সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রান্তিক কৃষক ও খামারিদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য পরিশোধের মাধ্যমে। রোজার মাসে ২৫০০০ বক্স খাবার তৈরি ও বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা

প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বর্তমানে সংগঠনটির “করোনা ও বেঁচে থাকার যুদ্ধ” নামক প্রকল্পটিতে কাজ করছেন ১২ জন স্বেচ্ছাসেবী। প্রকল্পটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ফাউন্ডেশনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা স্বেচ্ছাসেবক ডা. মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, “আমাদের লক্ষ্য প্রতিদিন অন্তত ৩৫০ টি পরিবারের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা। পরিবার প্রতি ২ জন করে প্রতিদিন অন্তত ৭০০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা। ১২০ টাকার যে প্যাকেজ বক্স করা হয়েছে তাতে থাকছে ২ জনের জন্য পর্যাপ্ত ভাত, মুরগি ও সবজি যা তাদের ইফতার ও রাতের খাবারের জন্য পর্যাপ্ত।”

তিনি আরো জানান, “খাবার তৈরির জন্য চাল, মুরগি, সবজি সরাসরি সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে। শুধু তাই নয়। ১২০ টাকা খরচ করে তৈরি করা এ প্যাকেজ থেকে মুরগির যে অতিরিক্ত অংশ (গিলা, কলিজা ইত্যাদি) থেকে যাচ্ছে, তা দিয়ে অভুক্ত অবহেলিত প্রাণীদের ক্ষুধা নিবারণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”

ইফতার বিতরণ কর্মসূচীর একাংশ

প্রকল্পটির অর্থের যোগান আসে স্বতঃস্ফূর্ত দান ও বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। প্রতিদিনই আর্থিক হিসাব ও কর্মকান্ডের বিবরণ নিজস্ব ফেইসবুক পেইজে প্রদান করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা বজায় রেখে আসছে সংগঠনটি।
উক্ত পেইজের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০০ বক্স সুবিধাবঞ্চিত মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে ফাউন্ডেশনটি। পাবনা ও রংপুর হতে সবজি কেনা হয়েছে, এর মধ্যে ছিল আলু, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া। প্রতিদিন চাল প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ১২০ কেজি। বেগুনবাড়ি এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে এ ইফতার বিতরণ কর্মসূচী চলছে এবং দৈনিক প্রায় ৫০ হাজার টাকার ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।

নিরাপদ দূরত্ব মেনেই চলছে ইফতার সংগ্রহ

বর্তমানে প্রচেষ্টার সাথে আরো তিনটি সংগঠন এ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছে এবং পুরো রমজান মাস জুড়েই এভাবে খাদ্যাভাবে থাকা সুবিধা বঞ্চিত ৭০০ মানুষের মাঝে দৈনিক ইফতার পৌঁছে দেয়ার প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে চলেছে প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের এ প্রকল্পটি।

প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের ফেইসবুক পেইজ লিংক:- facebook.com/prochesta

নিজস্ব প্রতিবেদক/মোঃ নাফিউল ইসলাম টিপু

Platform:
Related Post