X

করোনার দিনগুলি – ৯ | আজ আমি ভীত

মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০
ডা. জি. এম. আরিফ

আজ বুকের মাঝখানটা চিনচিন করছে, চোখ দুটো ছলছল!

আমি একজন চিকিৎসক! আমার পরিবার ও সব ভয়কে জয় করে অবিরাম চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

দেখতে দেখতে এদেশে করোনার ৩ মাস হয়ে যাচ্ছে। বীরদর্পে সে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি সাধারণত যখন যে কাজে মনোনিবেশ করি, চেষ্টা করি সেটার শেষ পর্যন্ত দেখার। তবে কখনও সফল হই, কখনও বা বিফল। তাতে আমার মাথা ব্যথা নেই।

কিন্তু সত্যি আজ আমি ভীত!
আমি শংকিত!
আমি নিরুপায়!
আমি অসহায়!
আমি…!

কেউ একজন আমার পরিবারের আক্রান্ত হলেই শেষ! পর্যায়ক্রমে বাড়ির সবাই আক্রান্ত হবে।

কে কখন আক্রান্ত হবে?
আমার ৬ বছরের সন্তান?
আমার ৬ মাসের সন্তান?
আমার ৬৩ বছরের মা? 
আমার বউ?
আমার ভাই?
কি হবে? জানি না।

তবে এতটুকু জানি, মৃত্যুহার নেহাত কম নয়। আমার মত একজন সাহসী ছেলেও আজ নিরুপায়, অসহায়।

বড় ছেলেকে অনেক ভেবে চিন্তে পাঠালাম তার নানু বাসায়। যদি সে সেভ হয়। ছোট সন্তানকেও পাঠানোর চিন্তা করছি। নিজেও মানুষের সেবা দিতে গিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও থাকবো কিনা এখনো বুঝতে পারছি না! সবই অনিশ্চিত!

এ যাত্রায় বেঁচে যাবো তো? জানি না!

বড় ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়ে বুকের চিনচিনটা আজ বড্ড বেড়ে গেল।

না থাক! আজ আর লিখবো না। কি আর হবে লিখে? দিনশেষে আমি তো চিকিৎসক। আমার আবার ব্যথা!

ভালো থাকুক জাতির বীর, শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা- চিকিৎসক ও তার পরিবার। হে বাঙালী, একদিন বুঝবেন, চিকিৎসক কি জিনিস। কি অমূল্য সম্পদ আপনারা হারাতে যাচ্ছেন।

৭১ এ ছিল শুধু একদিন বুদ্ধিজীবী গণহত্যা দিবস। কিন্তু করোনা বলে যাচ্ছে- সব চিকিৎসক শেষ করেই বিদায় নিব!

আলবিদা!

Sarif Sahriar:
Related Post