X

দেহতত্ত্ব – জানার আছে অনেক কিছু || পর্বঃ ০১

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, রবিবার 

ডা. তানিয়া হাফিজ
জেড. এইচ. সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল। (২০০৩-০৪)
কারিতাস ঠিকানা প্রকল্প, রুপনগর, আরামবাগ, মিরপুর।

“স্ট্রেচ মার্ক অথবা ফাটাদাগ”

এটা হতে পারে তা পেটে/ পিঠে/ বাহুতে/ ঘাড়ে/ উরুতে/ স্তনে। জানেন কি আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে এখনো কত ভ্রান্ত ধারণা আছে?

ছবিঃ স্ট্রেচ মার্ক।

গতকাল আমার চেম্বারে একজন রোগী এসেছিলেন। তার সাথে একজন মহিলা ছিলেন (উনি হলেন রোগীর জা)।

রোগীর সমস্যা= তলপেটে ব্যথা। চেকআপ করতে যেয়ে বললাম জা কে বাহিরে যেতে।

রোগীঃ না, উনি থাকুক, সমস্যা নাই। (রোগীর বয়স কম, কথা ছোটদের মতো)

যাই হোক এবডোমিনাল এক্সামিনেশন করলাম। এপেন্ডিসাইটিস এর সাইন-সিম্পটম সব। আগেও একবার এমন হয়েছিল।

এরপর তার জা হঠাৎ করে বলে উঠলেনঃ “এই তোমার পেটে ফাটা দাগ কেন এগুলো?” রোগী চুপ। আবারও তার জা (ভাসুরের স্ত্রী) রাগান্বিত হয়ে বললেন “বলো তোমার পেটে এগুলো কিসের দাগ, কবে থেকে এমন হয়েছে?” (উল্লেখ্য রোগীর বিয়ে হয়েছে ২ মাস)

পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নিচ্ছে তা আমি বুঝতে পেরেছি ১০ বছরের প্র্যাকটিসে দেখেছি অনেকের মধ্যে এই ধারণা বিরাজ করে যে “বাচ্চা পেটে থাকার সময় অথবা বাচ্চা হওয়ার পর এমন পেটে ফাটা দাগ হয়”।

ছবিঃ ফাটাদাগ অথবা স্ট্রেচ মার্ক।

তাই সাথে সাথে আমি রোগীকে বললামঃ আচ্ছা আপনি কি আগের থেকে মোটা হয়েছেন মানে ওজন কি বেড়েছে?

রোগীঃ হ্যা আমার ওজন অনেক বাড়ছে।

আমিঃ আপনার ওজন বৃদ্ধির ফলে চামড়া টানটান হয়ে ফেটে গেছে (এটা কোলাজেন ও ইলাস্টিন টিস্যুর জন্য হয়ে থাকে)।

রোগীর জা কে একটা ছোট্ট উদাহরণ দিলামঃ শুনেন বেলুন যখন প্রয়োজনের বেশি ফুলানো হয় তখন তা ফেটে যায়, কিন্তু মানুষের পেটতো তাই ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে চামড়া ফেটে দাগ দাগ হয়ে যায়।

এবার আসুন নিজেদের জানার জন্য আর কি কি কারণে স্ট্রেচ মার্ক হয়ঃ

১। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি
২। অতিরিক্ত ওজন থেকে স্লিম হয়ে যাওয়া
৩। গর্ভধারনের পর থেকে
৪। সন্তান প্রসবের পর
৫। বয়ঃসন্ধিকাল
৬। হরমোনের পরিবর্তন
৭। স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দীর্ঘদিন ত্বকে ব্যবহারের ফলে
৮। হরমোন থেরাপি
৯। কুসিং সিন্ড্রোম/ মারফেনস সিন্ড্রোম

ছবিঃ ফাটাদাগ অথবা স্ট্রেচ মার্কের কারণ।

সচেতনতা বৃদ্ধি হতে পারে এইসব ভ্রান্ত ধারণা থেকে মুক্তির উপায়। নিজে জানার পাশাপাশি অন্যের জানা ভুল ধারণাগুলিকে যুক্তির সাথে বুঝিয়ে দেয়া আমাদের দায়িত্ব।

Sadia Kabir:
Related Post