X

পার্কিন্সন ডিজিজ প্রতিরোধে ভ্যাক্সিন প্রয়োগের কথা ভাবছেন গবেষকগণ

অতি সম্প্রতি ডাবলিনে অবস্থিত United neuroscience নামের একটি বায়োটেক প্রতিষ্ঠান পার্কিন্সন ডিজিজের ভ্যাক্সিন আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছেন। ভ্যাক্সিনটি পরীক্ষামূলকভাবে ১ম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হয়। পার্কিনসনিজনম একটি স্নায়ুজনিত রোগ, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে আলফা সাইনুক্লিন নামক একটি বিষাক্ত প্রোটিন ক্রমাগত জমাট বাঁধতে থাকে এবং Lewy Bodies এ রূপান্তরিত হয়। এই Lewy Bodies মস্তিষ্কের কোষসমূহের অর্থাৎ নিউরনের মৃত্যু ঘটায়। গবেষকদলের আবিস্কৃত ভ্যাক্সিন “PDO1A” বিষাক্ত এই আলফা সাইনুক্লিনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করে, যার কারণে তা জমাট বাঁধতে পারেনা। বরং উল্লেখিত এন্টিবডিটি “আলফা সাইনুক্লিন ফাইব্রিল” এর সাথে যুক্ত হয়ে রক্তে সামগ্রিকভাবে এই প্রোটিনের পরিমাণ কমায়।

গবেষণার ১ম ধাপে, প্রাথমিক পর্যায়ের পার্কিনসনিজমে আক্রান্ত ২৪ জন রোগীর উপর পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করলে শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রেই এন্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া UB-312 নামের আরেকটি ভ্যাক্সিন নিয়েও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং যেটি কিনা সদ্য মৃত ব্যক্তির মস্তিষ্কের টিস্যুতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করলে সাফল্যজনক ফলাফল আনতে সক্ষম হয়।

ভ্যাক্সিন ছাড়াও আরেকটি সম্ভাবনাময় পদ্ধতি রিপ্রোগ্রামড স্টেম কোষ প্রতিস্থাপন দ্বারাও এ রোগের চিকিৎসার কথা ভাবা হচ্ছে। পার্কিন্সন ডিজিজে ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণকারী কোষের মৃত্যু হয়। ফলে ডোপামিনের অভাবে ব্যক্তির অঙ্গ সঞ্চালনে অক্ষমতা দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই স্টেম কোষগুলো ডোপামিন নিঃসরণকারী কোষসমূহ পুনরায় তৈরি করতে সক্ষম, ফলে পার্কিন্সন ডিজিজে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁটাচলা ব্যাহত হয়না।

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে প্রায় ১০ মিলিয়নের মত মানুষ পার্কিন্সনিজমে আক্রান্ত। এর চিকিৎসায় কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে আসলেও এ রোগ পুরোপুরি প্রতিকারের কোনো উপায় এখনো উদ্ভাবিত হয়নি।

স্টাফ রিপোর্টার/হৃদিতা রোশনী

Platform:
Related Post