X

“শুধু এক ধাপ পিছিয়ে যান”: ডা. শুভদীপ চন্দ

২৪ মার্চ ২০২০:
ডা. শুভদীপ চন্দ, কার্ডিওলজিস্ট

এক বাস নষ্ট হয়ে আছে। বাস থেকে নেমে যাত্রীরা ঠেলছেন। কিন্তু বাস চলছে না। এক ছোট ছেলে সেখানে ছিল। সবার দেখাদেখি সেও ধাক্কা দিল। বাস চলা শুরু করলো।

বাস কী ওই শিশুর ধাক্কায় চলেছে? মোটেই না। হয়তো সবার পরে ওই নিউটন বলটুকুরই অভাব ছিল। সে ওই থ্রেশহোল্ড লেভেল পূর্ণ করে দিয়েছে। বা ধরুন, দিনের শেষে আপনি বাড়ি ফিরছেন। এক ভিক্ষুক ভিক্ষা চাইলো। আপনি পাঁচটাকা দিলেন। আপনি ভাবছেন- পাঁচ টাকায় কী হয়? পাঁচ টাকা কিছুই না। কিন্তু আপনি হয়তো জানেন না ভিক্ষুকের সারাদিনে আজ সাতানব্বই টাকা হয়েছিল। আপনার পাঁচ টাকায় মুহূর্তেই তার তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার হয়ে গেল। সে এখন বাড়ি ফিরতে পারবে। একদিনের জন্য তার অপমানজনক ভিক্ষুক পরিচয়ের সমাপ্তি।

আপনি হয়তো ভাবছেন কতলোকই তো বাইরে- ডাক্তার, নার্স, পুলিশ। আমিও একটু বের হই। কি আর উনিশ বিশ হবে? বা এইতো একঘন্টা আগে হাত ধুলাম। এ এক ঘন্টায় কিছুই ছুঁই নি। হাত না ধুই! বা আরো পাঁচটি হেক্সিসল বেশি কিনে রাখি। ক্রাইসিস প্রিয়ড বাড়তে পারে। কিন্তু আপনার মাধ্যমে ভাইরাস আরেকজনের শরীরে, সেখান থেকে অন্য শরীরে, এভাবে তৃতীয় জনের কাছ থেকে কোনো বৃদ্ধ ব্যক্তির শরীরে চলে গেলো। লোকটি মারা গেল। আপনি হয়তো জানেন না একটি হেক্সিসল না পেয়ে পাঁচ জন লোক আরো পাঁচটি ফার্মেসি ঘুরছে।

সো প্লিজ স্টেপ ডাউন। ব্রেক দ্যা চেন। জাস্ট এক স্টেপ পিছিয়ে যান। আপনি আপনার কাজটি করুন। আপনার কোনো ফরেনারের সাথে কনটাক্ট হয় নি, আপনি ইমিউন, আপনার সাথে সব কম বয়সীর উঠা বসা। কিন্তু ভাইরাসের জন্য আপনিও একটি রাস্তা হয়ে যেতে পারেন। আপনার মাধ্যমেই ভাইরাস কোনো ডায়েবেটিক, হাইপারটেনসিভ, স্মোকার, এজমাটিক, হাইপোথাইরয়েড, এজেড লোকের শরীরে পৌঁছে যেতে পারে। আপনি জানেন না কিন্তু আপনি উনার জন্য মৃত্যু দূত।

কোভিড উনিশের কোনো ঔষধ নেই, ভ্যাক্সিন নেই, কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা- এ ভাইরাস নিয়ে কেউ জন্ম নেয় নি, কারো শরীরে আপনা-আপনি তৈরিও হয় না। কোনো না কোনো মানুষের শরীর থেকেই এসেছে। আপনার শরীরটা সে বাহক শরীর না হোক।

জাস্ট স্টেপ ডাউন। জাস্ট ব্রেক দ্যা চেন। প্লিজ ব্রেক দ্যা চেন।

Platform:
Related Post