X

রিস্ট্রেইন করে রাখা ছবি নিয়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৬ জুন, ২০২০, শুক্রবার

গত ২৪ জুন, ২০২০ রোজ বুধবার বাংলাদেশের এক স্বনামধন্য পত্রিকায় একজন রোগীকে রিস্ট্রেইন করা অর্থাৎ হাত বেঁধে রাখার ছবি দিয়ে চিকিৎসকদের নামে অপপ্রচার করা হয়। সেখানে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত এক রোগী হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ওই রোগীকে ‘কথিত’ আইসিইউতে নেওয়া হয়। এরপর ক্রমাগত টাকার চাপ দেয়া হয় রোগীর পরিবারকে। রোগী মারা যান, মৃত্যুর পরেও বেডের সঙ্গে মৃতের হাত বাঁধা ছিল।

বাস্তব সত্য হল, একজন আইসিইউর রোগী যখন ভেন্টিলেটরে থাকেন, তখন তাকে প্রকৃতপক্ষেই রিস্ট্রইন করে রাখা যায়। এটা আন্তর্জাতিক প্রটোকল এবং মেডিকেল সায়েন্স কর্তৃক স্বীকৃত ও শতভাগ বৈধ। রোগী যখন অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং আক্রমণাত্মক হয়ে যান, তখন তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শারীরিক বা রাসায়নিক উপায়ে রিস্ট্রেইন করা হয়।

কেন রোগীকে রিস্ট্রইন করে বা বেঁধে রাখতে হবে ?

গুরুতর রোগীদের ভেন্টিলেটরের সাথে এডজাস্ট করার জন্য সেডেটিভ এবং হিপনোটিক্স ঔষধ প্রয়োগ করা হয়, প্রয়োজনে মাসল রিলাক্সেন্ট দিয়ে অবশ করে রাখা হয়। এতে রোগীর মস্তিষ্ক শীতল থাকে এবং ফুসফুসে ভেন্টিলেটর কর্তৃক প্রদেয় অক্সিজেন প্রবাহ নিশ্চিত হয়। অনেক প্রকারের রিস্ট্রইনট যেমন- বেল্ট, জ্যাকেট দিয়ে রোগীর হাত, পা, কনুইয়ে বেধে তাকে শান্ত রাখা হয় যেন সে নিজের এবং কারো ক্ষতি করতে না পারে। এসময় রোগী অস্হির থাকেন, জ্ঞানের মাত্রা কম থাকে, এমনকি রোগী মারামারি করতে, অথবা টান দিয়ে মুখের এন্ডোট্রাকিয়াল টিউব, নাকের এনজি টিউব, ইউরিনারি ক্যাথেটার, স্যালাইন ক্যানুলা ইত্যাদি খুলে ফেলতে পারেন। যেহেতু এক্ষেত্রে রোগী খুবই অস্থির হয়ে থাকেন, তাকে শান্ত করাটা খুব সমস্যা হয়ে যায় বলে রিস্ট্রইন করা হয় বা বেঁধে রাখতে হয়।

এখানে রোগীকে শান্ত করার জন্য বেঁধে রাখা ছবিকে ভুলভাবে পত্রিকায় উপস্থাপন করা হয়েছে। চিকিৎসকরা রোগীকে রিস্ট্রইন করে রেখেছিলেন যেন সে শান্ত থাকতে পারে। কিন্তু খবরটা বোধগম্য হলেও শিরোনামে ‘টাকার জন্য বেধে রাখার হলো লাশের হাত’ এই অংশটুকু ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। খবরটার মূল অংশে, লাশের হাত যে টাকার জন্যই বেধে রেখেছে, অন্য কোন কারণে নয় – এরকম কিছু পরিষ্কার লেখা নেই। তাহলে এই শিরোনাম ও লেখার মধ্য দিয়ে মূলত পাঠকদের ভুল সংবাদ প্রদান করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক / সাদিয়া কবির

Fahmida Hoque Miti:
Related Post