X

যুক্তরাজ্যে চিকিতসকদের MRCP ডিগ্রি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

প্রসঙ্গ : MRCP UK (MEMPERSHIP OF THE ROYAL COLLEGES OF PHYSICIANS OF THE UNITED KINGDOM)

 

এখানকার কিছু দেওয়া হল MRCP UK regulation থেকে, যেটা আপনি https://www.mrcpuk.org/…/MRCP%28UK%29-Regulations-2016-17.p… সাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন, আর কিছু তথ্য লেখক নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দিয়েছেন ।

MRCP UK পরীক্ষার মূলত দুইটা পার্ট আছে, পার্ট ওয়ান এবং পার্ট টু।

পার্ট টু এর আবার দুইটা অংশ আছে,

পার্ট টু রিটেন এবং পার্ট টু ক্লিনিকাল যেটাকে PACES ( Practical Assessment of Clinical Examination Skills) বলে।

 

 

 

 

পার্ট ১ পরীক্ষাঃ

এখানে পরীক্ষার্থীর ক্লিনিক্যাল সায়েন্সের বেসিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং জ্ঞানের উপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। মেডিসিনের প্রায় সব সাবস্পেশালিটি থেকেই প্রশ্ন থাকে, এছাড়াও বেসিক বিষয় যেমন এনাটমি, ফিসিওলজি, স্ট্যটিসটিক্স ইত্যাদি বিষয় থেকেই প্রশ্ন থাকে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে http://www.mrcpuk.org/mrcpuk-examinations/part-1/format ভিজিট করুন।

প্রশ্নের ধরন বেস্ট অব ফাইভ (BOF)। প্রশ্নে সাধারনত একটা ক্লিনিক্যাল সিনারিও দেয়া থাকে, যেখান থেকে একটা প্রশ্ন করা হয়। উত্তরের অপশন থাকে ৫ টি, সেখান থেকে বেস্ট অপশনটি উত্তর হিসাবে বেছে নিতে হবে। দুই পেপারের প্রশ্ন উত্তর করতে হয়, প্রতিটিতে ১০০ করে প্রশ্ন থাকে। কোন নেগেটিভ মার্কিং থাকে না।

 

কিভাবে পড়বেন পার্ট ওয়ানের জন্য?

আপনি যেহেতু MRCP part 1 দিচ্ছেন, ধরে নেওয়া যায়, আপনার মেডিসিনের যে কোন একটা টেক্সট বই মোটামুটি ভাবে পড়া আছে। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি যে কোন একটা প্রশ্ন সেট নিয়ে সেটা পরিপূর্ন ভাবে পড়া। Onexam, Pastest, Passmedicine ইত্যাদি থেকে যে কোন একটা সেট প্রশ্ন পড়লেই হয়। একটু ভাল করে খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, প্রশ্ন ভিন্ন হলেও নির্দিষ্ট কিছু টপিক থেকেই প্রায় বেশিরভাগ প্রশ্ন করা হয়। এজন্য খুব কার্যকরী একটা পদ্ধতি হল যে কোন একটা প্রশ্ন পড়ার পর সাথে সাথে ঐ প্রশ্নের মূল যে টপিক সেটা পরিপূর্ন ভাবে পড়ে ফেলা। তাহলে ঐ বিষয় সংশ্লিষ্ট যে কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। উদাহরন স্বরুপ, আপনি একটা প্রশ্ন সলভ করলেন যেটার মূল বিষয় polycystic kidnye disease। এখন যদি আপনি polycystic kidnye disease সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ে ফেলেন তাহলে এই রিলেটেড যে কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। polycystic kidnye disease এমন একটা গুরুত্বপূর্ন টপিক যেটার জ্ঞান আপনার পার্ট-১, পার্ট-২ রিটেন, এমনকি PACES পরীক্ষাতেও কাজে দিবে। এটা একটা উদাহরন দিলাম মাত্র। এইভাবে পড়লে একসময় দেখবেন সব গুরুত্বপূর্ন টপিকই আপনার পড়ে হয়ে গেছে।

 

সবচেয়ে ভাল হয় যদি পরীক্ষার আগে কিছু মক এক্সাম দিতে পারেন। অনেক অনলাইন কোর্সেই মক এক্সাম দেওয়ার অপশন আছে। এজন্য ভাল হয় পরীক্ষার দুই-তিন মাস আগে এরকম যে কোন একটা কোর্সে সাবস্ক্রাইব করে ফেলা, তাহলে আপনি ঐ সময়ে নিজের ইচ্ছামত মক এক্সাম দিতে পারবেন। এতে করে আপনি নিজের লেভেলটা বুঝতে পারবেন এবং ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবেন।

 

 

 

পার্ট ২ পরীক্ষা:

 

এখানেও কোশ্চেন ফরম্যাট একই, অর্থাৎ বেস্ট অফ ফাইভ (BOF)। তবে এখানে তিন পেপারে পরীক্ষা হয়, এজন্য দুই দিনে পরীক্ষা দিতে হয়। প্রতি পেপারে ৯০ টা করে প্রশ্ন থাকে।

 

সব প্রশ্নই ক্লিনিকাল ওরিয়েন্টেড। সাধারনত একটা ক্লিনিক্যাল সিনারিও দেয়া থাকে এরপর ঐ রিলেটেড প্রশ্ন দেয়া হয়। অনেক ডাটা ইন্টারপ্রিটেশন ধরনের প্রশ্নও থাকে, যেমন spirometry, haemoglobin electrophoresis, audiometry, ABG analysis ইত্যাদি। এছাড়াও পার্ট ২ রিটেন এক্সামে অনেক ইলাস্ট্রেশন থাকে যেমন- X-ray, CT scan, MRI scan, ECG, Echo ইত্যাদি। সুতরাং এইসব বিষয়ে ক্লিনিক্যাল জ্ঞান থাকা জরুরী। প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে আরও জানতে এখানে ভিজিট করতে পারেন- http://www.mrcpuk.org/mrcpuk-examinations/part-2/format

 

কিভাবে পড়বেন পার্ট ২ রিটেন এর জন্য?

পার্ট ওয়ানের জন্য যেভাবে প্রিপারেশন নিয়েছেন, একইভাবে পড়তে পারেন পার্ট ২ রিটেনের জন্যও। প্রশ্ন সলভ করার বিকল্প নেই। তবে পার্ট ২ রিটেনের জন্য pastest এর পুরো সেট পড়তে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। চাইলে পরীক্ষার কয়েক মাস আগে pastest এ সাবস্ক্রাইব করতে পারেন। এক্সট্রা হিসাবে সেখানে অনেক দরকারী ভিডিও পাবেন আর মক এক্সাম দিতে পারবেন ইচ্ছামত।

 

যেসব বই পড়তে পারেন:

১।মেডিসিনের যে কোন একটা স্ট্যান্ডার্ড টেক্সট বই। আমরা যেহেতু ডেভিডসন পড়ে অভ্যস্ত, সেটা পড়লেই যথেষ্ট। 
২।সাথে আব্দুল্লাহ স্যারের Short Cases in Clinical Medicine বইটা পড়তে পারেন। এই বইটা এমনকি পার্ট ওয়ান এবং PACES পরীক্ষার আগেও পড়তে পারেন।

৩। Rapid Review of Clinical Medicine for MRCP Part 2 by Sanjay Sharma, Rashmi Kaushal বইটাও বেশ গুরুত্বপূর্ন। সবচেয়ে ভাল হয় প্রিপারেশনের শুরুতেই এটা পড়ে ফেলা, কারন এখানে সব ধরনের প্রশ্ন নিয়েই আলোচনা করা আছে। কাজেই এটা পড়লে স্বল্প সময়ে প্রশ্নের ধরন গুলো আপনার মাথায় চলে আসবে।

আগেই বলেছি যে পার্ট ২ রিটেন এ অনেক ইলস্ট্রেশন থাকে। প্রশ্ন  সমাধান করার সময় অনেক ইলাস্ট্রেশন পাবেন। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আরএকটা উপায় বলতে পারি, সেটা হচ্ছে gogole এর image search। ধরুন আপনি bronchiectasis এর CT scan দেখতে চান। তাহলে goole এ গিয়ে bronchiectasis লিখে image search দিন। দেখবেন bronchiectasis এর হাজার হাজার CT scan এর ছবি পেয়ে যাবেন। প্রথম ২০ থেকে ৩০ টা ছবি দেখলেই আপনার মাথায় bronchiectasis এর image মোটামুটি ভালভাবেই ঢুকে যাবে। এইভাবে কমন যেসব ইলাস্ট্রেশন পরীক্ষায় থাকে সেগুলো দেখতে থাকুন, বারবার দেখুন, তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

 

MRCP এর সব গুলো পার্টেই pattern recognition খুব দরকারী একটা বিষয়। MRCP কে এজন্য অনেকেই game of pattern recognition বলে থাকেন। পরীক্ষা গুলোতে যে কোন disease এরই একটা প্যাটার্ন অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়। যেমন rheumatoid arthritis এর সাথে splenomegaly দেখলে আপনার মাথায় felty’s syndrome আসতে হবে। weight gain+ proximal myopathy= cushing’s syndrome, appearance change+bitemporal hemianopia= acromegaly, recent air travel+ leg swelling= DVT এরকম অনেক প্যাটার্ন আপনি প্রশ্ন সলভ করতে করতে বুঝতে পারবেন। সুতরাং যত পারুন প্রশ্ন সমাধান করুন।

 

পরীক্ষার মার্কিং সিস্টেম, সেন্টার, ফী ইত্যাদি তথ্য আপনি mrcpuk.org সাইটে একটু ঢুঁ মারলেই বুঝতে পারবেন, বিধায় এখানে আলোচনা করলাম না।

MRCP(UK) এর শেষ ধাপ PACES বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তীতে দেওয়া হবে

আরও যেসব বইএর সহায়তা নিতে পারেন-

১।Basic Medical Sciences for MRCP Part 1 Philippa J. Easterbrook—এখান থেকে এনাটমি সেকশনটা দেখে নিতে পারেন। ক্লিনিক্যাল রিলেটেড এবং কনসাইজ- বেশ দরকারী।
২।Essential Revision Notes for MRCP Fourth Edition by Philip A Kalra—এই বইয়ের বিশেষ করে Clinical Pharmacology,Toxicology and Poisoning চ্যাপ্টারটা খুব দরকারী।

 

 

 

তথ্য : Dr. Mohd. Mosharraf Hossain Khandaker, MRCP (UK)

 

 

Ishrat Jahan Mouri: Institution : University dental college Working as feature writer bdnews24.com Memeber at DOridro charity foundation

View Comments (3)

Related Post