X

বয়স এবার বাড়বে না, কমবে

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০: নিজের সতেজ ও সুন্দর রূপলাবণ্য বজায় রাখতে কে না চায় বলুন?যৌবনশক্তি ধরে রাখার চেষ্টা মানুষের বহুকালের৷ মহাবিশ্বের আনাচে কানাচে পদচারণা থেকে শুরু করে পুরো পৃথিবীকে সে হাতের মুঠোয় এনে ফেললেও থামাতে পারেনি বয়সের চাকা৷ অবশেষে সেই অপেক্ষার যেন অবসান ঘটতে চলল৷ সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এক আণবিক চাবির (মলিকিউলার সুইচ) সন্ধান পেয়েছেন, যার মাধ্যমে এই বয়সের চাকাটি থামিয়ে দেয়া যাবে; এমনকি উলটো ঘোরানোটাও সম্ভব৷

‘বয়স’ বা ‘এজিং’ মানে কী?

প্রাণীদের জীবনকালের পুরোটা জুড়েই শরীরের কোষের জন্ম মৃত্যু চলতে থাকে৷ নতুন জন্ম নেয়া কোষের সংখ্যা যখন মারা যাওয়া কোষের তুলনায় অনেক বেশি থাকে, তখনই ওই প্রাণীর শরীর আকারে, শারীরিক শক্তিতে বাড়তে থাকে৷ কিন্তু যখনই উল্টোটা ঘটে, অর্থাৎ মৃত কোষের সংখ্যা বেড়ে যায়, ঠিক তখনই বার্ধক্য দেখা দেয়৷ এসময় শরীরের অন্যান্য কোষের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ক্ষতির সম্মুখীন হয়; যার কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রদাহজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অন্যান্য অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়া নিয়ণ্ত্রণ করে, এমন আণবিক চাবিটি তারা খুঁজে পেয়েছেন৷ এতে করে কোষের প্রদাহজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে,অর্থাৎ কোষের মৃত্যুহার কমানো সম্ভব৷ আর এটি সম্ভব হলে শরীরে কোষের জন্মমৃত্যুর মধ্যে ভারসাম্য আনা সম্ভব হবে৷

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক দল বিজ্ঞানী সম্প্রতি এক গবেষণা নিবন্ধে তাদের আবিষ্কৃত এ আণবিক চাবিটি সম্পর্কে বলেন৷ ৬ ফেব্রুয়ারি এ সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় সেল মেটাবলিজম জার্নালে৷ গবেষক দল দেখেন, শরীরের ঝুঁকি শনাক্ত ও সম্ভাব্য প্রদাহের বিরুদ্ধে সাড়া দেয়ার জন্য যে প্রোটিনটি কাজ করে থাকে,তা হলো এনএলআরপিথ্রি ইনফ্ল্যামাসোম৷ এই প্রোটিনটি কখনো কখনো অতি সক্রিয় হওয়ার কারণে স্মৃতিভ্রংশ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ নানা মারাত্নক রোগের ঝুঁকি দেখা যায়৷ এই প্রোটিন থেকে বিশেষ এক ধরনের অণু সরিয়ে নেয়ার মাধ্যমে প্রোটিনটিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা সম্ভব৷ আর গবেষকগণ এ বিশেষ অণু অপসারণের কাজটিই সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন৷ যে প্রক্রিয়ায় কাজটি করা হয়,তাকে বলা হয় ডিএসিটাইলেশন৷

এখন মনে হতে পারে, বড় কোন প্রদাহে তাহলে এ প্রোটিনের অনুপস্থিতি সংকটকে আরো বাড়িয়ে তোলার কথা৷ বিজ্ঞানীরা আশ্বাস দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে প্রোটিনটিকে এসিটাইলেশন করা হবে, অর্থাৎ সুইচ অন করা হবে৷ তার মানে প্রোটিনটি সক্রিয়তা নিষ্ক্রিয়তার সিদ্ধান্ত মানুষই নিতে পারবে৷

নিজস্ব প্রতিবেদক/সজীব কুমার

Platform:
Related Post