X

বিশেষ অজ্ঞের বকবকানি

ইতোমধ্যে বেশ কিছুদিন হলো শেষ হয়েছে ইন্টার্নী ( আমার না , যারা ইন্টার্ন ছিল তাদের)।আমি পিচ্চিকাচ্চি মানুষ , সব মসৃণভাবে চললে আগামী বছর এসময় থাকব ইনশাল্লাহ ঐ পরিচয়ে ।

ঘোষনা এসে গেছে ৩৬ তম বিসিএস এর । ডাক্তার নিবে ১৮৭ জন ।
৩৫ ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে রিটেন পরীক্ষা। খালি ছিট ছিল ৩১৮ । 
অনেকেই খালি সিটে বসার জন্য ইতিমধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু করে দিয়েছেন।
যারা ঠেলাঠেলি শুরু করেছেন তারাই দিন শেষে সফলকাম । কারন ঠেলাঠেলি না করলে ছিট পাওয়া যায় না ..এটা বাংলাদেশের নিয়ম , অলিখিত নিয়ম ।
স্বল্প সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার যাকে বলে আরকি ।

® ডাক্তারের সংখ্যা কত ???

__আমি সঠিক সংখ্যা জানি না । তবে সত্তর হাজারের বেশি যে রেজিস্টার্ড এমবিবিএস ডাক্তার আছেন এটা বলতে পারি ।

® বিশেষজ্ঞ কত জন ???

__কত আর হবে হাজার দশেক । এর বেশি যদি থাকে তাহলে সংশোধনের অনুরোধ থাকল ।

® কেন বিসিএস এর বকবকানি ???

__ইন্টার্ন শেষ করার পর আপনি মোটামুটি উদ্ববাস্তু । খ্যাপ বা ক্লিনিক আপনার ভরসা হবে ।

আপনি সমাজের প্রথম শ্রেনীর নাগরিক কিন্তু আপনার সম্মানের দাম কত জানেন ?? আমিও জানি না । তবে আন্দাজ করতেই পারি ।

খ্যাপে রাত আট টা থেকে সকাল আটটা বারো ঘন্টায় অন এভারেজ হাজার থেকে পনেরো শ টাকা । ঘন্টা কত করে পড়ে ????

ফার্স্ট ক্লাস নাগরিক কিন্তু আপনি এটা ভূলে যাবেন না । আর টাকা দিয়ে কি আর সব কিছু বিচার করলে হয় , এটা ভেবে সান্তনা খুজবেন ।

চাকরী যদি করেন ক্লিনিকে পাবেন বিশ হাজারের মত । ডিউটি আওয়ার আর নাইট মিলিয়ে ছয় মাসেই ওজন হারাবেন টিবি রোগীর মত ।

এতদিন বাবার টাকায় পড়ালেখা করলেন , এবার তো বাসায় একটু সাপোর্ট দেয়া লাগে । চিন্তা বাড়ল ।
বয়সটাও কম হলো না , অর্ধেক জীবনটাও তো পূর্ন করা দরকার ; আই মিন অর্ধাঙ্গী দরকার । সুতরাং চিন্তা ওভারলোডেড ।

ফ্যামিলি হিস্ট্রি অব হাইপারটেশন ছাড়াই আক্রান্ত হয়ে যাবেন ।

পরিবারের প্রতি দ্বায়িত্ববোধটা বয়সের সাথে চলে আসে , না চাইলেও আসে । যখন আকাংখার সাথে বাস্তব মিলে না ভর করে হতাশা ।

মেডিকেলের পাচ বছরের চরম হতাশা আবার রিলোড হয় ।

ম্যাট্রিক্স অথবা এমডি, এমএস এর গাইডে মুখ ডুবিয়ে হাতটা চলে যায় মাথায় । যাবেই বা না কেন ???? পরিক্ষা দিতেও যে হাজার সাতেক টাকা লাগে । চান্স পেলে তো একটু রিলিফ না পাইলে সাত হাজার টাকায় তিনটা হাফ লিটারের মাম পানিই সান্তনা ।

হতাশ করে দিলাম মনে হয় !!!! তা একটু দিলামই ( কারন আমি এই স্টেজে যায় নি তো ; আর বাঙ্গালি স্বভাবের ক্রমধারা বজায় রেখে একটু কাঠি তো করতেই পারি । নাকি বলেন ??  

আমি এখন ভাবি পাশ করে ইন্টার্ন শেষে কিছুদিন পড়ে একটা পরিক্ষা দিব আর চান্স পেয়ে যাব । এটা আমার স্টেজে সবাই ভাবে । ভাবনাটা হয়তো অমূলক নয় । কারন মানুষ স্বপ্ন দেখতে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে । স্বপ্নেই যখন দেখব কম দেখব কেনো !!!!

স্বপ্ন ধুলিস্যাত হতে বেশি না ৩৬৫ দিনের কিছু বেশি বা কম লাগে । আমারও তাই ই লাগবে ।

এবার ইন্টার্ন হিসেবে টোটাল কত জন ঢুকেছে সেটা আমি জানি না তবে সংখ্যা হাজার দুয়েকের কম মনে হয় হবে না । কিন্তু সিট কিন্তু ১৮৭ ।

দিলাম না বিসিএস । এটা ভাবলে লস । কারন , ক্লিনিকের এইট পাশ মালিক আগামীকালকেই আপনাকে সালাম জানাতে পারে । তখন কিন্তু আপনি বেকার , সমাজের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হয়েও বেকার । মানতে কষ্ট হলেও বাস্তবতা এটাই । আমার ভাইকে দেখেছি তার স্ট্রাগল গত সাত বছর ধরে ।

বিসিএস দিয়ে গ্রামে পোস্টিং দিবে , আমার টার্গেট গ্রামের বাতাসে মিলিয়ে যাবে । না ভাইয়া , টার্গেট মিলিয়ে যাবে না উপরন্তু আপনার ফুসফুস তেড়ে ফুড়ে ফুলে উঠবে । নতুন স্পৃহা পাবেন , সত্যি বলছি পাবেন ।
মূল লিখাঃ নাসিম অনি
পরিমার্জনাঃ আবিদ হাসান
আবিদ হাসান:

View Comments (5)

Related Post