X

প্রাচীন মিশরের ৪,০০০ বছর পুরানো মমিতে সেকালের দন্তশৈলীর নজির

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৬শে জুন, শুক্রবার, ২০২০

ধারণা করা হয়, প্রায় ৯,০০০ বছর ধরে সময়ের প্রয়োজনে নানা রূপে দন্তবিদ্যার প্রচলন চলে আসছে পৃথিবীর বুকে। যদিও দাঁত তোলা এবং দাঁত ব্যথা জনিত বিভিন্ন প্রতিকার আরও অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। বিশ্বজুড়ে প্রাচীন অবশেষগুলির অধ্যয়ন মূলত হাজার বছর ধরে চলে আসা ডেন্টাল সার্জারি এবং কসমেটিক ডেন্টাল প্র্যাকটিসের প্রয়োগকেই প্রমাণ করে। এসব ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষ হতে মিশরীয়দের দ্বারা পরিচালিত অসংখ্য ডেন্টাল প্র্যাকটিসের প্রমাণও পাওয়া যায়।

খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ অব্দে রচিত হয় “দ্যি এডউইন স্মিথ প্যাপিরাস”, যাতে কিনা খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের প্রচলিত বেশ কিছু দাঁতের অসুস্থতার চিকিৎসাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ অব্দে নির্মিত “এবার্স প্যাপিরাস” এ মুখের সমস্যা ও তার প্রতিকার জনিত এগারোটি পদ্ধতি লিপিবদ্ধ রয়েছে।

এর মধ্যে চারটি হলো নড়ে যাওয়া দাঁতের চিকিৎসা সংক্রান্ত। এছাড়াও সেই সময় দন্ত চিকিৎসায় এমন একটি মিশ্রণের ব্যবহার করা হত যা আধুনিক সময়ের ফিলিংয়ের অনুরূপ: এতে একটি ফিলার উপাদান (গ্রাউন্ড বার্লি), একটি তরল ম্যাট্রিক্স (মধু) এবং হলুদ রং এর একটি এন্টিসেপ্টিক উপাদান যোগ করা হয়। তবে ধারণা করা হয়, এটি দাঁতে ফিলিং হিসেবে অথবা নড়ে যাওয়া দাঁত স্বস্থানে ধরে রাখতে স্প্লিন্ট হিসাবে ব্যবহৃত হত। প্রায় ২,১০০ বছর বয়সী এক মিশরীয় মমির সিটি স্ক্যান করার পর বিজ্ঞানীরা তার দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া অংশসমূহ লিনেনে পূর্ণ হওয়ার প্রমাণ পেয়েছিলেন, যা কিনা প্রথমে ডুমুরের রস বা সিডার তেলের মতো কোনো ওষুধে ডুবানো হয়েছে বলেও ধারণা করেন তারা।

সেকালের ফারাওনিক দন্ত চিকিৎসকেরা পুনর্নিমাণের কাজে বেশ দক্ষ ছিলেন বলেও জানা যায়: তাদের করা কাজসমূহে ডেন্টাল ব্রিজের তিনটি উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে। এমনকি, এক বা একের অধিক হারিয়ে যাওয়া দাঁতগুলো আশেপাশের দাঁতের সাথে সোনার বা রূপার তারের সাহায্যে পুনরায় সংযুক্ত করে দেয়া অবস্থায়ও পাওয়া গিয়েছে। তবে, এই কাজগুলি কি রোগীর জীবদ্দশায় নাকি মৃত্যুর পরে তাদের কবর দেওয়ার আগে সম্পাদিত হয়েছিল কিনা তা নিয়ে এখনো রয়েছে সংশয়।

তথ্যসূত্র: https://theafricanhistory.com/622

নিজস্ব প্রতিবেদক
নাফিসা নুসরাত নিসা

হৃদিতা রোশনী:
Related Post