X

নিঃশ্বাস আমার বন্ধু

১৬এপ্রিল, ২০২০

বর্তমানে আমরা সবাই কমবেশি মানসিক চাপে রয়েছি কোভিড-১৯ এর জন্য। মানসিক চাপ ব্যপারটি অদৃশ্য হলেও এর প্রভাব কিন্তু মারাত্মক। মানসিক চাপের কারণে নার্ভাস সিস্টেমের একটি প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদ্ভব ঘটে যা ‘ফাইট এন্ড ফ্লাইট’ রেসপন্স। যেমন, রাস্তায় একটি বিড়াল বা কুকুরের উপস্থিতি অগ্রাহ্য করা বা সেটাকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ফাইট। আবার জঙ্গলে একটি বাঘ সামনে পড়া মাত্র নিজেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নাম ফ্লাইট। এধরণের প্রতিক্রিয়ায় কিছু শারীরিক পরিবর্তন ঘটে যার মধ্যে নিঃশ্বাস নেবার ধরন অন্যতম।

নার্ভাস সিস্টেমের ২টা ধরন রয়েছে যা সিমপ্যাথেটিক এবং প্যারাসিমপ্যাথেটিক সিস্টেম নামে পরিচিত। মানসিক চাপ এর কারণে সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সক্রিয় হয় যা শরীরের উপর একটু বেশি চাপ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে প্যারাসিমপ্যাথেটিক সিস্টেম বিভিন্ন ক্ষেত্রে শারীরিক চাপ শিথিল করতে সাহায্য করে।

বেশিরভাগ সময়ই মানসিক চাপ সৃষ্টির কারণগুলো পরিবর্তন করা না গেলেও তার প্রভাব থেকে নিজেকে অনেকটা রক্ষা করা সম্ভব। নিজেকে বোঝানো এক্ষেত্রে হতে পারে প্রথম ধাপ। যেমন, কোন কারণে কেউ যদি টেনশনে থাকে তবে প্রথমেই নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন এই টেনশনের কারণে তার শারীরিক কোন ক্ষতি না হয়। খুব সহজেই সেটা করা যায় নিঃশ্বাস নেবার পদ্ধতিতে একটু পরিবর্তন নিয়ে আসার মাধ্যমে। যেটাকে বলা হয় ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ’। যার মাধ্যমে খুব সহজেই সিমপ্যাথেটিক সিস্টেমের পরিবর্তে প্যারাসিমপ্যাথেটিক সিস্টেমকে সক্রিয় করা সম্ভব যা চাপ শিথিল করতে সাহায্য করবে।

২ঃ১ ব্রিদিং এক্সারসাইজ এর জন্য প্রথম ধাপে সমপরিমাণ শ্বাস গ্রহণ এবং ত্যাগের পরিমাণ সমান হতে হবে৷ যেমন ৩ সেকেন্ড নিঃশ্বাস নেওয়া হলে ছাড়তেও হবে ৩সেকেন্ড সময় নিয়ে। শারীরিক সক্ষমতা এবং বয়সভেদে সেটা সুবিধামত কমবেশি সময় হতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন সময়টা অবশ্যই সমান থাকে। এভাবে পরপর ৩বার সমপরিমাণ নিঃশ্বাস নিতে এবং ছাড়তে হবে।
দ্বিতীয় ধাপের বেলায় নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় নেওয়ার সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যদি ৩ সেকেন্ড শ্বাস গ্রহণ করা হয় তবে ৬ সেকেন্ড পর্যন্ত তা ছাড়তে হবে। এই ধাপ ২/৩ বার অনুসরণ করতে হবে।
সমগ্র প্রক্রিয়াটি যতবার খুশি করা যায় যার মাধ্যমে খুব সহজেই মানসিক চাপ কাটিয়ে নিজেকে রিল্যাক্স করা সম্ভব।

সবকিছু আমাদের হাতে থাকে না। কিন্তু নিজের ইচ্ছাশক্তি পারে আমাদেরকে আরেকটু ভালো রাখতে। তাই সবসময় নিজের ভাল থাকার ব্যপারটা নিজের নিশ্চিত করতে হবে।
ভালো থাকবেন। শুভকামনা সবার জন্য।

লিখেছেন-
অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডা. টি এইচ এম এনায়েত উল্লাহ খান

Publisher:
Related Post