X

গল্পটা বোনস লাইব্রেরীর, গল্পটা বাংলাদেশের প্রথম এনাটমি লাইব্রেরীর

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্মিত হল বাংলাদেশের প্রথম এনাটমি লাইব্রেরীর।
যার  নাম দেওয়া হয়েছে  “বোনস লাইব্রেরী ” নামে । এই বোনস লাইব্রেরী কিভাবে-কবে হল,  খুঁটিনাটি গল্প জানা যাক মোঃ জামিউর রহমান আকাশের লেখা থেকে।

 

 

এবারের সংসদ এর ইশতেহারের সবচেয়ে ব্যাতিক্রমী ইশতিহার ছিল বোনস লাইব্রেরী কারণ আমাদের ইশতিহারে দেয়ার আগে বোনস লাইব্রেরী এর নাম কেউ কখনো আগে শোনেনি। বলতে গেলে বিশ্বে প্রথম বোনস লাইব্রেরী স্থাপনের উদ্যোগ আমরাই নিয়েছি। তাই প্রথম যে সমস্যা গুলোর মুখোমুখি আমরা হয়েছি তা হল সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব। কি কিভাবে করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। রুম কোথায় হবে?? বোনস কোথায় পাবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। চিন্তা ভাবনা করতে করতে লাইব্রেরীর পাশে একটা খালি জায়গা পেলাম যা কোন কাজে ব্যবহার হতো না। যেই চিন্তা সেই কাজ। স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে শূন্যের উপর বানানো শুরু করলাম আমাদের স্বপ্নের বোনস লাইব্রেরী। এই কাজে আমরা সব থেকে বেশি সাহায্য পাই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ভাইয়ের। তিনি আমাদের পুরো রুমটি তৈরী করতে সহযোগিতা করেন। আমরা দ্বিগুণ উদ্যমে কাজ করতে থাকি। প্রথম প্রথম অসম্ভব মনে হচ্ছিলো কাজটা। কিন্তু আমাদের অনুপ্রেরণার জায়গাটায় ছিলো আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আামাদের উপর বিশ্বাস এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেধাবী শিক্ষাথীদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা।

 

 

সরকারী মেডিকেল কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থী আসে মধ্যবিত্ত এবং দরীদ্র পরিবার থেকে। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর ১ম বর্ষে সম্পূর্ণ নতুন জায়গায় এসে মেডিকেলের এতো এতো দামী বই খাতা কিনার পরে ৩০-৪০ হাজার টাকা দিয়ে এক সেট বোনস কিনে পড়া আসলেই অনেক পরিবারের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমাদের বোনস লাইব্রেরী বানানোর উদ্যোগ। কিন্তু এই উদ্যোগ হয়তবা কখনোই সম্ভব হতো না যদি আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষকবৃন্দের সহযোগীতা না পেতাম। ধন্যবাদ দিতে চাই আমাদের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইকবাল হোসেন স্যার, অধ্যাপক ডা. চিরঞ্জীব বড়ুয়া স্যার, ডা. সায়েদা রুমানা সিদ্দিকী ম্যাম, চমেকসুর সাবেক প্রো ভিপি Atnamis Roy দাদা, ৫৪ তম প্রজন্মের ধ্রুব রায় দাদা এবং আই ডি এ ১৮-১৯ কে আমাদের বোনস লাইব্রেরী তে বোনস দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য।

আরো ধন্যবাদ দিতে চাই আামাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা সেলিম মো জাহাঙ্গীর স্যারকে আমাদের সকল ধরনের সহযোগিতা করার জন্য।

 

আপাতত ১৫ সেট বোনস এবং এনাটমির প্রায় ১৩০ টি মেইন বই নিয়ে যাত্রা শুরু করছে আমাদের বোনস লাইব্রেরী। প্রতিনিয়ত বাড়বে আমাদের বোনস লাইব্রেরীর বোনসের সংখ্যা। এভাবেই একদিন আসবে যেদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের কোন শিক্ষার্থীর আর বোনস কিনতে হবে না। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায়।

 

সবশেষে আমরা এই বোনস লাইব্রেরী চট্টগ্রাম মেডিকেল এনাটমী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান, যিনি ছাত্রদের কাছে পিতার সমতুল্য ছিলেন, যিনি ছাত্রদের কে তার সন্তানের চেয়েও বেশী ভালো বাসতেন,যার হাত ধরে আমাদের এনাটমী বিভাগ সাফল্যের চূড়ায় আড়োহন করেছিল সেই মহাপুরূষ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মনসুর খলিল স্যার কে উৎসর্গ করলাম এবং এই লাইব্রেরী এর নাম দিলাম “প্রফেসর ডাঃ মনসুর খলিল বোনস লাইব্রেরি” । স্যার ওপারে ভালো থাকবেন।

 

 

ছবি ও লেখা : মোঃ জামিউর রহমান আকাশ

Ishrat Jahan Mouri: Institution : University dental college Working as feature writer bdnews24.com Memeber at DOridro charity foundation
Related Post