X

কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে ভিয়েতনামের অনন্য দৃষ্টান্ত

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৩ এপ্রিল ২০২০:

চীনের ঠিক পাশের দেশ ভিয়েতনাম কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। জানুয়ারির শেষদিকে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি সনাক্ত হলেও এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ২৬০ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে দেশটিতে। মৃত্যুহার শূন্য। কোভিড ১৯ আক্রান্ত ২৬০ জনের মাঝে ১৪৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৭৫,৪৮৪ জনের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে দেশটিতে।

বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশ যখন করোনা মোকাবেলায় নাজেহাল, সেখানে ঘনবসতিপূর্ণ উন্নয়নশীল এই দেশটি করোনা মোকাবেলায় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা থেকে শেখার আছে বাংলাদেশেরও। চীনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপের শুরু থেকেই ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ভাইরাসটি চীনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করেন এবং এর প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেন। বিভিন্ন উন্নতদেশ যেখানে গণহারে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সেখানে ভিয়েতনাম কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেট করে রাখা এবং সেসব ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের সনাক্ত করার ওপর জোর দিয়েছে। এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষার্থী, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সদের করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামিল করে লোকবল বাড়ানোও দেশটির সাফল্যের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

শুরু থেকেই ভিয়েতনামে প্রবেশ করা বহিরাগতদের ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছিল। বাইরের সব দেশের সাথে বিমানচলাচল বন্ধ করে দেয় দেশটি। কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসতে পারে এমন সন্দেহ হলে সে তথ্য রাখা হচ্ছিল। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই দেশটির সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি যখন দেশে যখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা মাত্র ১০ জন তখনই একটি গোটা শহরের সবাইকে তিন সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সঠিক সময়ে দ্রুত পদক্ষেপই দেশটিকে করোনার করালগ্রাস থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছে। দেশটির সামরিক বাহিনী নগরের প্রতিটি সড়কে এবং গ্রামে কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে দেশের সকল নাগরিককে ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে। এমনকি করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর জন্যও ছিল শাস্তি। এখন পর্যন্ত গুজব ছড়ানোর জন্য ৮০০ জনকে গুণতে হয়েছে জরিমানা। প্রতিটি নাগরিককে এই মহামারীর বিরুদ্ধে দূর্গ গড়ে তুলতে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর জানানো আহবান দেশের প্রত্যেক নাগরিককে অনুপ্রাণিত করেছে এই দুর্যোগের বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে। এছাড়া গণমাধ্যমেও প্রচুর তথ্যমূলক সচেতনতা চালানো হয়।
স্বল্পখরচে স্বল্পসুবিধার মাঝেই কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সাফল্যের জন্য দেশটি আন্তর্জাতিক মহলেও বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সঠিক সময়ের এই সঠিক পদক্ষেপ অনুপ্রেরণা হতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশেরও।

নিজস্ব প্রতিবেদক/তাহিয়া তাসনিম

Platform:
Related Post