X

করোনাকালে রমজানে করণীয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৪ এপ্রিল, ২০২০, শুক্রবার: আগামী ২৫ এপ্রিল শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান, ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। অন্য বছরের মত এবারও মুসলিমরা রোজা রাখবেন, তবে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাড়তি কিছু সতর্কতা এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।


ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনবিধি:

১. সামাজিক দূরত্ব এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ১ মিটার কিংবা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে হবে।

২. সামাজিক কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠান যত সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ করা যায় ততই ভাল। এতে সংক্রমিত হবার ঝুঁকি কম থাকে।

৩. ছোট পরিসরে একত্রিত হওয়া তবে অবশ্যই শারীরিক দূরত্ব ১ মিটার কিংবা ৩ ফুট মানতে হবে। সম্ভব হলে বড় জমায়েত বাদ দিতে হবে।

৪. মসজিদের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রত্যেক জমায়েতের আগে এবং পরে কীটনাশক বা সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

৫. মুসল্লীদের বাসায় জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যেমন টেলিভিশন, রেডিও কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে নামায সরাসরি সম্প্রচার করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।

৬. যাকাত আদায় কিংবা দান করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

৭. বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের যেকোন সামাজিক এবং ধর্মীয় জমায়েত থেকে বিরত থাকতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি:

১.রোজার সাথে করোনা আক্রান্ত হবার ঝুঁকি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। তাই সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে রোজা রাখার ব্যাপারে বাধা নাই। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি রোজা রাখতে চাইলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

২. করোনা ছাড়া অন্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ ইত্যাদি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে রোজা রাখবেন।

৩. বাসায় দীর্ঘ সময় থাকার ফলে আমাদের নড়াচড়া কম হচ্ছে তাই ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন। এতে শরীর সুস্থ থাকবে। এক্ষেত্রে টেলিভিশন চ্যানেল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যায়াম বিষয়ক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা যেতে পারে।

৩. নিজেকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করতে প্রচুর পরিমানে পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে। ইফতার এবং সেহেরিতে পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। শাক সবজি ফল সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। তেল চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. তামাক জাতীয় দ্রব্য যেমন সিগারেট জর্দা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে। তামাক কিংবা তামাক জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার ফুসফুস নষ্ট করে যা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। কিছু সময় পর পর ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার দিকে নজর রাখতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্যবিধি:

এই সময়ে শারিরীক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়ার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা, সহনশীল আচরণ করা, একে অপরের কাজে সাহায্য করার মাধ্যমে একে অপরের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারি। পরস্পরের সাথে যোগাযোগের জন্য ফোন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারি।

ঘরোয়া সহিংসতা এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। করোনা মহামারীর আড়ালে যেন কোন নারী শিশু এবং পুরুষ কোন ধরনের নির্যাতনের শিকার না হয় এদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা একান্তকাম্য।

তথ্যসূত্র: WHO Guideline for Safe Ramadan Practice in COVID-19
নিজস্ব প্রতিবেদক/বেনজির জাহাঙ্গীর নুয়েল

Platform:
Related Post