X

করিমগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জে পালিত হলো ৩৯ তম বিসিএসে যোগদানকৃত নব্য ডাক্তারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

গত ১১/১২/১৯ ইং তারিখ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জে  ৩৯তম বিসিএসে নব নিয়োগ প্রাপ্ত চিকিৎসকদের জন্য এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের  আয়োজন করা হয়। সার্বিক অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডা.জয়নাল আবেদিন টিটো, ইউএইচএফপিও, করিমগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

তিনি জানান,এবারের ৩৯তম বিসিএসে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি চাকুরী নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তারদের বেশ কয়েকটি এসএমএস এবং ফোন পান তিনি। প্রশিক্ষণ-দান কর্মে ব্যস্ত থাকার কারণে তখন তিনি এক দুইটির বেশি ফোন কল রিসিভ করতে পারেন নি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে সবাইকে এসএমএস করে জানান, ১১ তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকায় সিভিল সার্জন অফিসে এসে অপেক্ষা করার কথা। তিনি আরো জানান, নবীন ডাক্তারদের কেমন করে গ্রহণ করবেন এ বিষয়ে খুব অল্প সময়ে মনে মনে একটি ছক এঁকে নিয়েছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সকাল সাড়ে দশ ঘটিকায় একটি কালো পাজেরো জীপ, একটি সাদা টয়োটা হ্যারিয়ার গাড়ি এবং একটি বড় টয়োটা মাইক্রোবাস ছুটল সিভিল সার্জন আফিসের দিকে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে নবীন ডাক্তারদের সেখানে রিসিভ করতে গেলেন একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং দুই জন ইন্সপেক্টর।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নবীন ডাক্তারগণ করিমগঞ্জে এসে উপস্থিত হন। সবাইকে কাঁটাবিহীন টকটকে লাল গোলাপ, মিষ্টি সুবাস ছড়ানো রজনীগন্ধা আর ফল দিয়ে বরণ করা হয়।

পরিচয় পর্ব শেষে তিনটি গাড়ীতে করে আঁকা বাকা মেঠোপথের উপর দিয়ে তিনি সহ নব্য ডাক্তারগণ একটি ইপিআই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
ইপিআই কেন্দ্রর স্বাস্থ্য সহকারী তাহমিনা আক্তার সেখানে তাদের স্বাগত জানান।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী হল স্বাস্থ্য সহকারীরা। নিভৃত পল্লীতে ঘুরে তারা খোঁজ নেন কোন বাড়িতে কোন শিশুর জন্ম হল। নবজাতকের নাম, ঠিকানা সব কিছু টুকে নিয়ে আসেন তারা। একটি বড় রেজিস্টারে সেগুলো লিপিবদ্ধ করা হয় এবং পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে কবে, কোন তারিখে সেই শিশুকে কোন টিকা দেয়া হবে, এর একটা পাকা পরিকল্পনা লিখে রাখা হয়। যেদিন যে শিশুর টিকা পাওনা হয় এর আগের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা কেন্দ্রে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন তারা। শিশুদের টিকা দেয়া ছাড়াও কিশোরীদের টিটেনাস রোগের টিকা, গর্ভবতী নারীদের গর্ভ ও প্রসবকালীন চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাগিদ প্রদান করেন এই স্বাস্থ্য সহকারীরা।
ইপিআই কেন্দ্রে লম্বা সময় ব্রিফিং চলে।

তারপর সেখান থেকে যাওয়া হয় বাদেশ্রীরামপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে। বিকেল তিনটার বেশি বাজে তখন। একটি  চমৎকার, পরিপাটি গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র এই বাদেশ্রীরামপুর কমিউনিটি ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিকের দরজার সামনে রঙিন পাপোশ।  এর পাশে বড় একটি জুতা রাখার র‍্যাক। জুতা খুলে র‍্যাকে রেখে, পাপোশে পা ঘষে ক্লিনিকে প্রবেশ করতে হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধের মাধ্যমে আগত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান, শিশুদের উচ্চতা, ওজন ও বাহুর পরিধি মেপে, গ্রোথ মনিটরিং চার্টে মিলিয়ে শিশুদের পুষ্টির এবং পুষ্টিহীনতার পরিমাপ করা হয় এখানে। গর্ভবতী নারীদের চেক আপ করা, চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের ব্লাড প্রেসার এবং ব্লাড গ্লুকোজ মাপা ইত্যাদি সিএইচসিপিদের কাজ।  কমিউনিটি ক্লিনিক থাকায় গ্রামের মানুষগুলো তাদের বাড়ীর পাশেই এ সেবাগুলো পাচ্ছে । এখানেও কিছুক্ষণ ব্রিফিং চলে।
নবাগত ডাক্তারদের নিয়ে তারপর আবার করিমগঞ্জ ইউএনএফপিও অফিসে ফেরা হয়। অতঃপর ডাক্তারদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া পর্ব চলে।
নবাগত ডাক্তারদের বরণ করা এবং তাদেরকে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেখানোর মাধ্যমেই ১১/১২/১৯ ইং তারিখটি অত্যন্ত আনন্দঘন ভাবেই কাটে।

ডা.জয়নাল আবেদিন টিটো আশাবাদী, এই নবীন ডাক্তারেরা মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করবে। পীড়িতের মুখে হাসি ফোটাবে।

স্টাফ রিপোর্টার /নাজমুন নাহার মীম

Fahmida Hoque Miti:
Related Post