X

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দিকে তাকিয়ে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার

আশঙ্কা আর সেশন জটের ভয় নিয়ে পার করছে এমবিবিএস ও বিডিএস এ অধ্যয়নরত মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তারা তাদের হতাশার কথা প্রকাশ করছে বিভিন্ন গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

তেমনই একটি পোস্ট শেয়ার করেছে এনাম মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী শোয়েব আহমেদ। তিনি তার পোস্টে বলেন, নভেম্বরেও রেগুলার ব্যাচের প্রফ হওয়ার কোনো আভাস নেই। জানুয়ারিতেও প্রফ নিতে পারবেন কিনা এ ব্যাপারেও সন্দিহান। এদিকে সময়ের কাটায় আমাদের ক্যারিয়ার থেকে ৬ টি মাস চলে গেছে। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতেও পরীক্ষা না হলে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি পুরো ১ বছর। এদিকে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এখনো সময় কাটাচ্ছে অনিশ্চয়তায় কেননা ৬০ মাসের বেতন কার্যকর করেছে কিনা এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সন্দিহান।

এমবিবিএস ডিগ্রীকে গিনেস বুক ওফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর ভাষ্যমতে সবচেয়ে কষ্টসাধ্য ডিগ্রী বলে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের কারিকুলামে শুধুমাত্র গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতেই কমপক্ষে ৬ বছর(গ্রাজুয়েশন + ইন্টার্নশিপ) চলে যায় একজন ডাক্তারের। কমপক্ষে কথাটা বলার কারণ, এটি তখনই সম্ভব যদি কেউ প্রতিটি পরীক্ষা একবারেই পাশ করে যায়। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীকেই সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়, সাথে প্রতিনিয়ত ডিপ্রেশন, মানসিক যন্ত্রণা, অবিরাম মস্তিষ্কের খাটুনি তো আছেই! এরপরেও জীবনে যদি যুক্ত হয় অতিরিক্ত আরো ১ বছর, তাহলে পুরো ৭- ৮ বছর শুধু কেটে যাবে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতেই। কারো কারো ক্ষেত্রে সেটা হয়ে যাবে ৯- ১০ বছর। একটু ভাবতে পারেন, ৮-১০ বছর শুধু গ্রাজুয়েশন এর জন্য ছুটে বেড়ানো একজন নব্য গ্রাজুয়েট ডাক্তারকে, এই রাষ্ট্র ও সমাজ কতটুকু সুবিধা বা মূল্য দিবে? এখানেই কি শেষ! এর সাথে যুক্ত আছে পারিবারিক চাহিদা, পোস্ট গ্র‍াজুয়েশন, বিসিএস সহ হাজারো কিছু। আবেগে নয় বাস্তবতাকে সামনে নিয়েই বলছি,

“নীতিনির্ধারক যারা আছেন দয়া করে আমাদের ভবিষ্যৎকে এভাবে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিবেন না”।

আমি বলছি না স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে মেডিকেল খুলে দিন। বলবো এতটুকুই, সময়ের সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে আর বিলম্ব করে আমাদের ভবিষ্যৎ কে হতাশায় ফেলবেন না। দ্রুত বিকল্প পন্থা ও কারিকুলাম প্রণয়ন করে দয়া করে আমাদের সেশন জটটি অন্তত কমান। যেই সেশন এর ক্লাস গত এক বছর আগে শেষ করে আমাদের শুধু প্রফ নামক পাবলিক পরীক্ষাটিই বাকি ছিলো সেই পড়া বিগত ৬ মাস ধরে পড়িয়ে কি ফায়দাটা হলো হয়তো বা আমরা কেউই তা বুঝিনি। বরঞ্চ এক্ষেত্রে পরবর্তী সেশনের ক্লাস- লেকচার গুলো অনলাইনে নিয়ে ফেললে আমরা কি অল্প হলেও এগিয়ে থাকতাম না? এমনত নয় অন্য কেউ এই ক্যারি- অন সিস্টেমে এগুচ্ছে না।

ভারত সহ বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে এই সিস্টেমে তাদের পরবর্তী সেশনের ক্লাস ধরে এগুচ্ছে। তবে আমরা কেনো পারছি না! কেনো একটি বিকল্প পথ বেছে নিয়ে এগুতে পারছি না?
তবে কি একটি প্রফই একটি ছাত্রের জন্য একমাত্র যাচাই ব্যবস্থা! আমাদের এই সেশন লস এর দায়ভার কিংবা ক্ষতিপূরণ এই রাষ্ট্র বা এই শিক্ষা ব্যবস্থা কি আমাদের দিবে? যদি তা না হয়, তবে কেনো এই প্রহসন!

 

Silvia Mim:
Related Post